কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার মসূয়া গ্রামে ছড়াকার, শিশুসাহিত্যিক সুকুমার রায়ের পৈত্রিক ভিটায় শুরু হয়েছে গ্রাম বাংলার লোকজ বৈশাখী মেলা। বুধবার থেকে পাঁচদিনব্যাপী শুরু হয়েছে এ বৈশাখী মেলা। জনশ্রুতি রয়েছে সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষ হরিকিশোর রায়চৌধুরী আনুমানিক ২০০ বছর পূর্বে বৈশাখ মাসের শেষ বুধবার কালভৈরবী পূজা উপলক্ষে এই মেলার প্রচলন শুরু করেন। বর্তমানে ঐতিহাসিক রায় বাড়িটিতে রায় পরিবারের কোন বংশধর নাথাকায় কালভৈরবী পূজা বন্ধ হয়ে যায়। তবে এখনো লোকজ এ মেলাটির ঐতিহ্য ধরে রেখেছে স্থানীয় জনগণ। রায় বাড়ির সামনের খোলা মাঠ ও বিশালাকার পুকুরপাড় ও রাস্থার দুপাশের জায়গাজুড়ে বসে এ মেলা।
জানা যায়, রায় পরিবারের বাড়িটি বহুবছর ধরেই জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বিশলায়তনের এ রায় বাড়িটি বর্তমানে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধিনে রয়েছে। এ রায় বাড়িতেই ১৮৬০ সালে জন্মগ্রহণ করেন সত্যজিৎ রায়ের পিতামহ প্রখ্যাত শিশুসাহিত্যিক উপেন্দ্র কিশোর রায়চৌধুরী। ১৮৮৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন সত্যজিৎ রায়ের পিতা বিশিষ্ট ছড়াকার সুকুমার রায়। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির আগেই উপেন্দ্র কিশোর রায়চৌধুরী সপরিবারে কলকাতা চলে যান। ১৯২১ সালে সত্যজিৎ রায় কলকাতা শহরে জন্মগ্রহণ করেন।
কবি তানিয়া নাছরিন বর্ণালী বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাথে মিশে আছে এ রায় বাড়িটি। প্রতি বছর বৈশাখী মেলা উপলক্ষে মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কবি, সাহিত্যিকের আগমন ঘটে। রায় বাড়ি প্রাঙ্গণেই আগত কবি, সাহিত্যিকের গান ও কবিতা পাঠের আসর বসে।
কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার খানজাদা শাহরিয়ার বিন মান্নান বলেন, বাংলা সাহিত্যের চারণ ভূমি রায় বাড়িকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর গ্রাম-বাংলার লোকজ সংস্কৃতি বৈশাখী মেলা হয়ে থাকে। মেলা উপলক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থা অন্যান্য বছরের ন্যায়ই থাকবে এবং বিশেষ নিরাপত্তার জন্য সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা রয়েছে। বর্তমানে রায় বাড়িটি সংস্কারে সরকারের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কাজ করছে। সংস্কার কাজ সম্পন্ন হলে দর্শনার্থীদের কাছে এ মেলার আকর্ষণ আরো বাড়বে।
আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি জাগো বুলেটিনকে জানাতে ই-মেইল করুন- jagobulletinbd@gmail.com