সিলেট বিভাগের দীর্ঘতম সেতু সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কুশিয়ারা নদীর উপর নির্মিত রাণীগঞ্জ সেতু উদ্বোধনের মাধ্যমে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সুনামগঞ্জের দূরত্ব কমলো ৫৫ কিলোমিটার। আজ সোমবার সকাল ১১ টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালী এর উদ্বোধন করেন।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেনের সঞ্চালনায় উদ্বোধনস্থলে ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি, সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মোশারফ হোসেন, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মফিজ উদ্দীন আহম্মেদ, সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদেল বখত, জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আকমল হোসেন।
সুনামগঞ্জের সঙ্গে ভার্চুয়ালী যুক্ত প্রধানমন্ত্রী বাউল আব্দুল করিমের একটি লিখিত গান ও স্থানীয় শিল্পীদের নৃত্য পরিবেশনা উপভোগ করেন। এ উপলক্ষে রাণীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি।
রাণীগঞ্জ সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে হাওর বেষ্টিত সুনামগঞ্জ জেলার ঢাকাসহ দেশের অন্য জেলা-উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগের নতুন দিগন্তের যাত্রা শুরু হলো।
১৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭০২ মিটার দীর্ঘ ও সাড়ে দশ মিটার প্রস্থের এই সেতু চালুর মধ্যদিয়ে স্বপ্ন পূরণ হলো সুনামগঞ্জের ২৫ লাখ মানুষের। সাশ্রয় হলো প্রায় দুই ঘণ্টার বেশি সময়।
সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর-দক্ষিণ সুনামগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এ প্রসঙ্গে বলেন, সেতুটি সুনামগঞ্জের সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে নবদিগন্তের সূচনা করবে। স্থানীয় বাসিন্দারা এর সুফল ভোগ করবেন। ফলে হাওর অধ্যুষিত সুনামগঞ্জের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে গতিশীলতা আসবে।
সড়ক ও জনপথ সূত্র জানায় পাগলা-জগন্নাথপুর-রাণীগঞ্জ-আউশকান্দি মহাসড়কের রাণীগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর ওপর রাণীগঞ্জ পিসি গার্ডার ও বক্স গার্ডার সেতু নির্মাণ করে। রাণীগঞ্জ ও রসুলপুর এলাকার মধ্যে এই সেতুর অবস্থান। সেতুতে রয়েছে ১৫টি স্প্যান ও ১৬টি পিলার। ফ্ল্যাড লেভেল থেকে ১২ মিটার উঁচু দুই লেনের সেতুর দুই পাশে রয়েছে আড়াই কিলোমিটার সংযোগ সড়ক, দুটি কালভার্ট, টোলপ্লাজা, এক্সেল লোড ও কন্ট্রোল স্টেশন। সেতুর কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের ১১ আগস্ট। সড়ক ও জনপথ সূত্র জানায় পাগলা-জগন্নাথপুর-রাণীগঞ্জ-আউশকান্দি মহাসড়কের রাণীগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর ওপর রাণীগঞ্জ পিসি গার্ডার ও বক্স গার্ডার সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ১৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এই সেতু ও আড়াই কিলোমিটার সংযোগ সড়ক এবং টোল প্লাজা নির্মাণকাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ২৪ ব্যুরো কোম্পানি লিমিটেড ২৪ বি এবং এম এম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড-এমবিইএল। চুক্তি অনুযায়ী ৭০২ দশমিক ৩২ মিটার দীর্ঘ এবং ১০ দশমিক ২৫ মিটার প্রস্থ সেতুটির নির্মাণকাজ ২০১৯ সালের ১০ আগস্ট শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে সময় শেষ না হয়ে বিভিন্ন কারনে বিলম্বিত হয়ে সেটি আজ উদ্বোধন হলো।
আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি জাগো বুলেটিনকে জানাতে ই-মেইল করুন- jagobulletinbd@gmail.com