সারাদেশে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সশরীরে পাঠদান শুরু হয়েছে। বাঁধ ভাঙ্গা উচ্ছ্বাস আর দীর্ঘ দিনের চেনা পরিবেশে শিক্ষার্থীরা হয়ে উঠেছে প্রাণে ভরপুর।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী করোনা ভাইরাসের দুইডোজ টিকা নেয়া শিক্ষার্থীরাই প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষে পাঠ গ্রহণ করতে পারছে। অন্যরা অনলাইন ও টেলিভিশনের মাধ্যমে বাড়িতে বসে শিক্ষা গ্রহণ করবে।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নি¤œমুখী হওয়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না খুললেও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হয়েছে।
এদিকে, শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টদের স্বার্থে ২০ ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ স্বাক্ষরিত এক আদেশে ২০টি নির্দেশনা দিয়ে একটি আদেশ জারি করা হয়েছে।
খুলে দেয়া স্কুল ও কলেজের পরিবেশ নিয়ে রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ও শিক্ষক প্রতিনিধি সোলায়মান কবির জানান, সরকারি নির্দেশনা মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলেছে। এই প্রতিষ্ঠানের শতভাগ শিক্ষার্থী কভিড-১৯ টিকার দুই ডোজ টিকা নিয়েছে।
তিনি বলেন, দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন ক্লাস করবে এবং অন্যান্য শ্রেণির শিক্ষার্থীরা পর্যায়ক্রমে সপ্তাহে দ’ুদিন করে সশরীরে শ্রেণিকক্ষে ক্লাস করবে।
রাজধানীর মীরপুরের মনিপুর স্কুল ও কলেজের সহকারি প্রধান শিক্ষক সাইদা নার্গিস জানান, সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা উৎসাহ নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসছেন। পূর্বের মতো নিয়ম মেনে শিক্ষার্থী-অভিভাবক-শিক্ষক ও সংশ্লিষ্টরা যথাযথ স্বাস্থবিধি অনুসরণ করছে।
মাউশি’র অন্যান্য নির্দেশনায় রয়েছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের আনন্দঘন পরিবেশে শ্রেণি কার্যক্রমে স্বাগত জানানোর ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিন শিক্ষার্থীরা কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিষ্ঠানে অবস্থান করবে ও বাসা থেকে যাওয়া-আসা করবে সেই বিষয়ে তাদেরকে ব্রিফ করতে হবে। প্রতিষ্ঠানের একটি কক্ষ প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাসহ আইসোলেশন কক্ষ হিসেবে প্রস্তুুত রাখতে হবে। নির্দেশনাগুলো হলো-যেসব শিক্ষার্থী কডিড-১৯ টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছে, তারা সশরীরে ক্লাস করতে পারবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রবেশমুখসহ অন্যান্য স্থানে কডিড-১৯ মহামারি সম্পর্কিত সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে করণীয় বিষয়সমূহ ব্যানার বা অন্য কোনো উপায়ে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রবেশ পথে সব শিক্ষক, কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের তাপমাত্রা পরিমাপক যন্ত্রের মাধ্যমে নিয়মিত তাপমাত্রা মাপা ও তা পর্যবেক্ষণ করার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।
পরিস্থিতি বিবেচনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ অনলাইন/ভার্চুয়ালি শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে। শিক্ষার্থীদের জন্য বিতরণ করা অ্যাসাইনমেন্টসমূহের কার্যক্রম যথারীতি অব্যাহত থাকবে। এর আগের নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের ক্লাস রুটিন করতে হবে। শিক্ষার্থীদের ভিড় এড়ানোর জন্য প্রতিষ্ঠানের সবগুলো প্রবেশ পথ ব্যবহার করা ও যদি একটি প্রবেশ পথ থাকে তাহলে একাধিক পথের ব্যবস্থা করতে হবে।
এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানের সব ভবনের কক্ষ, বারান্দা, সিঁড়ি, ছাদ ও আঙিনা যথাযথভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। প্রতিষ্ঠানের সব ওয়াশরুম নিয়মিত সঠিকভাবে পরিষ্কার রাখা ও পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা রাখা। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারী, অভিভাবকসহ অন্য কেউ প্রবেশ/অবস্থান/ প্রস্থানের সময় সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে প্রতিপালন করতে হবে। সব শিক্ষক,শিক্ষার্থী ও কর্মচারী এবং সংশ্লি¬ষ্ট অন্য সবাইকে সঠিকভাবে মাস্ক পরিধান করার বিষয়টি নিশ্চিত করা। প্রতিষ্ঠানে সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দ্বারা হাত ধোয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখতে হবে। শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের বসার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে পারস্পরিক তিন ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যবস্থা করা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠ, ড্রেন ও বাগান যথাযথভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা ও কোথাও যেন পানি জমে না থাকে তা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। প্রতিষ্ঠানসমূহে শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির সংখ্যা নিরূপণ করা। প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে আনন্দঘন শিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে শ্রেণিকক্ষে কার্যক্রম পরিচালিত করা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি ও অভিভাবকদের সঙ্গে সভা করে এ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি জাগো বুলেটিনকে জানাতে ই-মেইল করুন- jagobulletinbd@gmail.com