ঢাকাবুধবার , ২৯ নভেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ
  1. অপরাধ
  2. আন্তর্জাতিক
  3. আবহাওয়া
  4. কর্পোরেট বুলেটিন
  5. কৃষি সংবাদ
  6. খেলাধুলা
  7. গণমাধ্যম
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জেলা সংবাদ
  11. ঢাকা বিভাগ
  12. ধর্ম ও জীবন
  13. নাগরিক সংবাদ
  14. পদ্মাসেতু
  15. পাঁচমিশালি
আজকের সর্বশেষ সব খবর

সবুজে ঘেরা সরকারি বাঙলা কলেজ

এস এইচ সবুজ
এপ্রিল ৪, ২০২২ ৩:৩৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

চারদিকে সবুজে ঘেরা মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক পরিবেশে ইতিহাস ঐতিহ্যে আর ভালোবাসায় কালের সাক্ষী হয়ে হয়ে দাড়িয়ে আছে মিরপুরের সরকারি বাঙলা কলেজ।

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের প্রত্যক্ষ ফসল সরকারি বাঙলা কলেজ। বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় এবং বাংলাকে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে ১৯৬২ সালে এই কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়। তৎকালীন সময় উচ্চশিক্ষার মাধ্যম ছিলো ইংরেজি। কেবল মাত্র এই কলেজে বাংলা মাধ্যমে পড়ানো হতো বলেই এই কলেজের নামকরন করা হয় বাঙলা কলেজ।

১৯৬২ সালে অস্থায়ীভাবে বকশি বাজারস্থ নবকুমার ইনস্টিটিউটে নৈশ মহাবিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও ১৯৬৭ সালে স্থায়ীভাবে রাজধানী ঢাকার মিরপুর প্রিন্সিপাল আবুল কাসেম সড়কের পশ্চিমপাশে প্রায় ৫৭ বিঘা জমির উপর এই কলেজ স্থানান্তর করা হয়। বাঙলা কলেজের প্রতিষ্ঠাকালীন প্রিন্সিপাল ছিলেন আবুল কাশেম। তিনি এই কলেজে প্রায় ৮ বছর বিনা বেতনে চাকরি করেন এবং ৪৫ টির উপরে বই লিখেন যা বাংলা সাহিত্যকে আরো সমৃদ্ধ করেছে।

বাঙলা কলেজ প্রতিষ্ঠার শুরুর দিকে কিছু শিক্ষিত বাঙালি বিদ্বান ব্যক্তি কলেজ প্রতিষ্ঠার বিরোধিতায় নেমেছিলেন। তাঁদের যুক্তি ছিল, বাংলা মাধ্যমে লেখাপড়া করলে ছাত্র-ছাত্রীরা চাকরি ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়বে। এমনকি ‘বাঙলা মৌলবি’ জন্ম হবে বলেও ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করতেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও বাঙলা মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহণ দ্রুতই জনপ্রিয়তা লাভ করে। প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে কলেজের সভাপতি ছিলেন ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ।

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা তৎকালীন সময়ে বাঙলা কলেজ দখল করে নেয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় পুরো ৯ মাস অবরুদ্ধ ছিল এই কলেজ। এ সময় কলেজের সাইনবোর্ড নামিয়ে ‘উর্দু কলেজ’ সাইনবোর্ড লাগানো হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় হাজারো বাঙালির আর্তনাদ এবং রক্তের সাক্ষী কালের সাথে বয়ে এসেছে মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ।

সরকারি বাঙলা কলেজ অতিতকে ধারণ করে ইতিহাসের পরম্পরায় পরম মমতায় বিলিয়ে যাচ্ছে শিক্ষার আলো। ১৯৮৫ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি কলেজটির জাতীয়করন করা হয়। এবং ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়।

বর্তমানে এই কলেজের শিক্ষার্থীর সংখা প্রায় ৩৪ হাজার। এই বিপুল শিক্ষার্থীদের আনাগোনার মুখরিত থাকে কলেজ প্রাঙ্গণ। এছাড়াও সবুজে ঘেরা এই ক্যাম্পাসের টান অনুভব করেন সবাই। বর্তমানে এখানে উচ্চমাধ্যমিক, অনার্স, মাস্টার্স ও ডিগ্রি পাশ কোর্স চালু রয়েছে। এর পাশাপাশি ১৮ টি বিষয়ের ওপর এই কলেজ থেকে অনার্স মাস্টার্স করা যায়।

কলেজের ৬টি একাডেমিক ভবনের মধ্যে রয়েছে কলা ভবন, বিজ্ঞান ভবন, বাণিজ্য ভবন, উচ্চমাধ্যমিক ভবন, মৃত্তিকা ভবন এবং প্রশাসনিক ভবন। এছাড়াও নামাজ আদায়ের জন্য রয়েছে সুবিশাল মসজিদ। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা শিক্ষার্থীদের আবাসন সুবিধার জন্য ৫তলা বিশিষ্ট ‘প্রিন্সিপাল আবুল কাশেম হল’ রয়েছে। এছাড়াও সরকারি অনুদানে আরো ১টি ছাত্রাবাসের কাজ চলছে। কলেজের ছাত্রছাত্রীদের চলাচলের সুবিধার জন্য ‘বিজয়’ বাস রুটিন অনুসার বিভিন্ন রুটে চলাচল করে আসছে।

২৪ হাজার শিক্ষার্থীর পাঠদানে বর্তমানে কলেজে ১৭৬ জন শিক্ষক কর্মরত আছেন। শিক্ষকদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা এবং কঠোর পরিশ্রমের ফলে এই কলেজের শিক্ষার্থীরা বর্তমান জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাফল্য লাভ করছে।

বিভাগ ও অনুষদসমূহ

বিজ্ঞান অনুষদ : রসায়ন, পদার্থবিজ্ঞান, গণিত, মৃত্তিকাবিজ্ঞান, প্রাণিবিজ্ঞান, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ

লা ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদ : ইংরেজি, বাংলা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজকর্ম, ইতিহাস, দর্শন, ইসলামিক স্টাডিজ, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ

বাণিজ্য অনুষদ : হিসাববিজ্ঞান, ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং, অর্থনীতি বিভাগ, মার্কেটিং, ব্যবস্থাপনা

উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণী- বিজ্ঞান, বাণিজ্য, মানবিক

একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি কলেজে সহশিক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিএনসিসি নেভাল ইউনিট, রোভার স্কাউট, এবং যুব থিয়েটার তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। এছাড়াও কলেজের নিজস্ব ডিবেট সোসাইটি আছে। ইতোমধ্যে কলেজের বিতর্ক দল বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃক আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতায় পুরষ্কার অর্জন করেছে।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি জাগো বুলেটিনকে জানাতে ই-মেইল করুন- jagobulletinbd@gmail.com