
দিনে যেমন রোদের প্রতাপ, রাতে তেমন গরম হাওয়া। হাঁসফাঁস করছে মানুষ। বেড়েছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট। ফলে চাকরিজীবী, শ্রমিক, শিক্ষার্থী এবং শিশু-বৃদ্ধ সবাই গরম ও তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।
চলতি মাসে অতিমাত্রায় লোডশেডিংয়ে দেখা দিয়েছে চাপা ক্ষোভ। উত্তর বঙ্গের নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ভয়াবহ লোডশেডিং চলছে। পয়লা জুলাই থেকে এই অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে।
এদিকে অল্প বয়সী শিশু, বৃদ্ধ রোগীরা খুবই সমস্যার মধ্যে পড়েছেন। তারা সারা রাত ঘুমাতে পাড়ছেন না সবসময় এক ধরনের অস্তিরতা কাজ করছে। ফ্রীজে রাখা দ্রব্যগুলি নষ্ট হচ্ছে।
আধাঘণ্টা পরপর লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে। তাই দিনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিদ্যুৎ মিলছে মাত্র ১০ ঘণ্টা! ঠিক কবে নাগাদ বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে তারও সদুত্তর দিতে পারছে না বিদ্যুৎ সরবরাহ ও বিতরণ বিভাগ।
বৃষ্টিহীন আষাঢ়ে কাট ফাটা রোদ আর গরমের দাপটে জনজীবনে যখন ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা তখন মিলছে না বিদ্যুৎ।
অস্বাভাবিক ও অসহনীয় লোডশেডিংয়ে তাই ডিমলার সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। নাকাল হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
কেবল ডিমলা নয় নীলফামারী জেলা সহ সব কয়টি উপজেলায়, পুরো জেলার ৬ উপজেলাতে চলছে লোডশেডিংয়ের ভয়াবহতা। আর নিদারুণ এই কষ্ট বর্ণনাতীত।
সবার মুখে একই কথা- এমন বিদ্যুৎ সংকট এর আগে কখনও দেখেননি কেউ। যতই দিন যাচ্ছে বিদ্যুৎ সংকট ততই যেন বাড়ছে।
এতে বিপাকে পড়েন ব্যাংক-বিমা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, দোকানপাট ও বাসাবাড়ির ভুক্তভোগীরা।
ভোর নেই, সকাল নেই, দুপুর নেই, সন্ধ্যা নেই, রাত নেই- বিদ্যুতের আসা যাওয়া চলছে প্রতি আধাঘণ্টা পর পর। কোনো কোনো উপজেলায় ১০-২০ মিনিট পরপরও লোডশেডিং দিচ্ছে।
ডিমলা উপজেলার সদর ইউনিয়নের ব্যবসায়ী নিতাই বলেন, ডিমলায় এমন বিদ্যুৎ সংকট তিনি এর আগে কখনও দেখেননি। তার কাছে মনে হয়, এই কারণেই রাত ৮টার মধ্যে মার্কেট, বিপণী বিতান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছিল।বিদ্যুৎ সাশ্রয়ীটা বিষয় ছিল না, সংকট ছিল বলেই হয়তো এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু ঈদ উপলক্ষে ১ জুলাই থেকে এই নিয়ম উঠে যাওয়ায় সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে, বিদ্যুৎ না পেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ক্ষোভ দেখাচ্ছেন অনেকে।
উল্লেখ্য, গ্যাস স্বল্পতার কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে লোডশেডিং হচ্ছে জানিয়ে এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
রোববার সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এ তথ্য জানান তিনি।
নসরুল হামিদ বলেন, গ্যাস স্বল্পতার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এতে অনেক জায়গাতেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে। গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হলে বিদ্যুৎ উৎপাদন পুনরায় স্বাভাবিক হবে।
যুদ্ধের প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির উচ্চমূল্য ও সরবরাহ অন্যান্য সব দেশের মতো আমাদেরকেও সমস্যায় ফেলেছে। এ পরিস্থিতিতে আপনাদের সাময়িক অসুবিধার জন্য আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি।
আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি জাগো বুলেটিনকে জানাতে ই-মেইল করুন- news.jagobulletin@gmail.com
