ঢাকাবুধবার , ১৯ মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  1. অপরাধ
  2. আন্তর্জাতিক
  3. আবহাওয়া
  4. কর্পোরেট বুলেটিন
  5. কৃষি সংবাদ
  6. খেলাধুলা
  7. গণমাধ্যম
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জেলা সংবাদ
  11. ঢাকা বিভাগ
  12. ধর্ম ও জীবন
  13. নাগরিক সংবাদ
  14. পদ্মাসেতু
  15. পাঁচমিশালি
আজকের সর্বশেষ সব খবর

কুরবানির স্মৃতি কথা

ইমরান তারিক
জুলাই ৯, ২০২২ ৭:৩২ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

কুরবানীর ঈদ সমাগত। জিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখ ইংরেজী জুলাই মাসের ১০ তারিখ এবারের পবিত্র ঈদুল আযহা পালিত হবে। মুসলিমদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব হচ্ছে ঈদুল আযহা তার প্রধান বৈশিষ্ট্য হল কুরবানী দেয়া। মহান রব হযরত ইব্রাহীম আঃ কে পরীক্ষা করতে চেয়েছিলেন তাঁর সবচেয়ে প্রিয় জিনিসের বিনিময়ে। প্রিয় নবী সেই কঠিন পরীক্ষায় সহজেই উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। তখন থেকে পশু কুরবানীর প্রচলন শুরু হয়।

পশু কুরবানীর মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে এই শিক্ষা দিতে চেয়েছেন যে, আমরা যেন আমাদের অন্তর থেকে প্রতিহিংসা, বিদ্বেষ, জিঘাংসা, বিকৃত মনোবৃত্তি, পাশবিক আচরণ এসব কিছুকে দুর করে আমাদের আত্মাকে পরিশুদ্ধ, পবিত্র করে তুলতে পারি।

পশু জবাই করার সাথে সাথে মনের পশুকেও জবাই করতে পারি। কুরবানীর এই শিক্ষা বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় আরো বেশী অনুভূত হচ্ছে। বিবাদ, বিদ্বেষ, হানাহানি দিনদিন মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। মধ্যযুগীয় বর্বরতা এখনও আমাদেরকে গ্রাস করে রেখেছে।

সমাজে নানারকম অপরাধ আগেও ছিল, এখন তা মহামারীর আকার ধারণ করেছে। কিন্তু এমনতো হওয়ার কথা নয়। মানুষের আয় বেড়েছে, জীবনযাত্রার মান বেড়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, প্রযুক্তি সর্বক্ষেত্রেই ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে। এসব উন্নয়নের সাথে মানুষের বিবেক-বুদ্ধি, সচেতনতা, আচার-আচরণের ধনাত্মক পরিবর্তন হওয়ার কথা। মানবিক মূল্যবোধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, দেশপ্রেম আরো সুগঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু উল্টো চিত্র দেখছি। সাম্প্রতিক সময়ে বীভৎস ঘটনাবলী ঘটেই যাচ্ছে। নষ্ট সমাজের ভয়াবহ রূপ ফুটে উঠছে।

কেন এরকম বাধ কেন উধাও হয়ে যাচ্ছে? চাঁদে যাওয়ার ৫০বছর পরও আমরা গুজবে বিশাস করে নির্মমভাবে পিটিয়ে কেন মানুষ খুন করছি? প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে, আমরা নির্বিকার, নিস্তব্ধ হয়ে কেন চেয়ে থাকি? যার পেছনে নামাজ পড়ি তাঁকে বিশ্বাস করা কেন কঠিন হয়ে পড়েছে? যিনি শিক্ষাগুরু তিনিই বা কেন এত বিকৃত রুচির অধিকারী? যে যেখানে আছে, সেখানে সে সবকিছু নিজের মত করে পেতে চাচ্ছে কেন? সবকিছু নিজের করে নিতে হবে কেন? তাহলে অন্যদের কি হবে? সমাজের কি হবে? সত্যিই কি উত্তর নেই?

কুরবানীর মর্মকথা যদি আমরা অনুধাবন করতে পারি, তাহলেই সহজের এসব সমস্যার উত্তর পেয়ে যাব।

লেখাটি শিরোনাম কুরবানীর স্মৃতি কথা। শুরুতেই কোরবানির শিক্ষা নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে,

কুরবানী স্মৃতি বলতে সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠা, কুরবানির পশুকে গোসল করানো, গলায় ফুলের মালা দিয়ে সাজানো। নিজে গোসল করে একসাথে ঈদের নামাজ পড়তে যাওয়া। নামাজ শেষে সকলেই হুজুরের জন্য অপেক্ষা করা। কোরবানির গরু বা ছাগল জবাই দেওয়া এবং জবাই পরবর্তী শুরু হয় গরুর চামড়া ছাড়ানো এবং প্রতিযোগিতা শুরু হয় দ্রুত গরুর কাটাকাটির কাজ শেষ করে রান্না করার। গরুর কাটাকাটি কাজ শেষ হলে শুরু হয় ভাগাভাগি করার কাজ। আমরা দেখেছি কুরবানীর গোশতকে তিনটি ভাগে ভাগ করতে, যার একটি ভাগ গরিব-মিসকিনকে অন্য একটি ভাগ আত্মীয়-স্বজনদের জন্য এবং অন্য ভাগটি নিজেদের খাওয়ার জন্য রাখা হতো।

অনেক সময় রান্নার শুরু করার পরও গ্রামের দূর দূরান্ত থেকে মানুষদেরকে বাসায় গোশতের জন্য আসতে দেখতাম, তখন আম্মাকে নিজেদের অংশ থেকে গোস্ত মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দিতে দেখেছি।

মূলত কোরবানি মানে হল ত্যাগ করা উৎসর্গ করা। এ পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে নিজের প্রিয় জিনিসের উৎসর্গ করার পরীক্ষা। সাথে সাথে নিজের মধ্যে থাকা সকল প্রকার পশুত্ব, কুসংস্কার অহংকার, দাম্ভিকতা থেকে মুক্ত করার এক উত্তম পন্থা।

এবারের কোরবানি ঈদে মহান রাব্বুল আলামিন দরবারে প্রার্থনা বিশ্ব ব্যাপি মহামারী দূরীভূত হোক সমাজ থেকে সকল প্রকার দ্বন্দ্ব, বিদ্বেষ অন্যায়, অত্যাচার দূরীভূত হয়ে এক সুন্দর সমাজ, রাষ্ট্রের উদ্ভব ঘটুক।

লেখকঃ শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি জাগো বুলেটিনকে জানাতে ই-মেইল করুন- news.jagobulletin@gmail.com