বন্যা দুর্গতদের জন্য বন্দি পাঠশালার নিজস্ব অর্থায়ন ও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় মোট অর্থায়নের পরিমাণ দাঁড়ালো ১০ লক্ষ টাকা। চলমান রয়েছে তহবিল সংগ্রহের কার্যক্রম।
বাংলাদেশের সকল শিক্ষামূলক প্লাটফর্মের মধ্যে বন্দি পাঠশালা-ই সর্বপ্রথম বন্যা কবলিত মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নেয় এবং সেই উদ্যোগের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছে বন্দি পাঠশালার শিক্ষার্থীরা।
বাংলাদেশের সকল শ্রেণীর মানুষের সাথে শিক্ষার্থীদের এই সহযোগীতামূলক কার্যক্রম ইতোমধ্যে প্রশংসিত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের নিয়ে বন্দি পাঠশালার এই সহযোগীতামূলক কার্যক্রমের জন্য প্রশংসার পাশাপাশি অন্যান্য প্লাটফর্ম গুলোও তাদের সাথে যুক্ত হচ্ছে।
বন্দি পাঠশালার টিমের সাথে সিলেটের ৫০ জন শিক্ষার্থী দিনরাত নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যাচ্ছে। শুকনা খাবার প্যাকেজিং,খাবার রান্না করা, সকল পণ্য ক্রয় থেকে শুরু করে সকল কাজগুলো করছে শিক্ষার্থীরাই।
বন্দি পাঠশালার প্রতিষ্ঠাতা মোঃ আব্দুর রহমান বলেন, ত্রাণ বিতরণ কাজের সাথে যুক্ত টিমের অনেকেই ইতোমধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তবুও আমাদের কাজ থেমে নেই, আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত আছে।
বন্দি পাঠশালা টিম এবং শিক্ষার্থীরা মিলে গত দুইদিনে সিলেটের কোম্পানিগঞ্জ সহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ১০ হাজার পরিবারে খাদ্য সরবরাহ করেছে। সিলেটের পর আজকে বন্দি পাঠশালার টিম যাচ্ছে সুনামগঞ্জে বন্যার্তদের মাঝে প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে।
এবার বন্দি পাঠশালা টিমে যুক্ত হয়েছে দুজন ভেটেরিনারি চিকিৎসক। সাথে থাকবে সকল গৃহপালিত পশুর জন্য প্রয়োজনীয় মেডিসিন এবং খাদ্যদ্রব্য।
পাশাপাশি রয়েছে একটি মেডিকেল টিম। খাদ্যদ্রব্য দেওয়ার পাশাপাশি সকলের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েও কাজ করে যাচ্ছে। লজ্জায় কিংবা সংকোচে অনেকে এড়িয়ে গেলেও বন্দি পাঠশালা মা-বোনদের জন্য স্যানিটারি ন্যাপকিন ত্রাণের সাথে সরবরাহ করছে।
বন্দি পাঠশালা প্লাটফর্মটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে সবসময়ই চেষ্টা করেছে পড়াশোনার পাশাপাশি মানবিক গুণাবলি শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে দেবার। শিক্ষাকে ব্যবসা নয়, সেবাতে পরিণত করার দীক্ষাটা দিয়েছে বিগত প্রায় তিন বছর একটানা ফ্রি লাইভ ক্লাসের মাধ্যমে।
আব্দুর রহমান বলেন, শিক্ষা বিস্তারে এবং মানবিক কাজগুলোতে যখনই কোনো সহযোগিতার প্রয়োজন হবে বন্দি পাঠশালা ছুটে যাবে সেখানেই।
একসময় হয়তো সিলেটে বন্যা থাকবেনা,একটা সময় সকলেই ফিরবে স্বাভাবিক জীবনে। কিন্তু এই যে টিমওয়ার্ক, একটানা রাতজাগার গল্প, অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে নিজের সবটুকু দিয়ে পরিশ্রম করে যাওয়া, রাতারাতি লক্ষ লক্ষ টাকা সংগ্রহ করা এবং হাজারো পরিবারকে আশার আলো দেখানোর এই গল্প গুলো রয়ে যাবে, ফ্রেমবন্দি হয়ে থাকবে হাজারো শিক্ষার্থীর মনে, একটা স্বশিক্ষার বার্তা দিয়ে যাবে সকলের দ্বারে এমনটাই প্রত্যাশা টিমের সাথে যুক্ত সবার।
উল্লেখ্য, বন্দি পাঠশালা’র অনলাইন প্লাটফর্মে নিয়মিত কয়েক লক্ষ শিক্ষার্থী যুক্ত আছে।
আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি জাগো বুলেটিনকে জানাতে ই-মেইল করুন- jagobulletinbd@gmail.com