
সংষ্কৃতি নগরী ময়মনসিংহে নানা সীমাবদ্ধতা, পৃষ্টপোষকতার অভাব, আর্থিক দৈন্য, নিবেদিত প্রাণ সংগঠকের অভাব, মঞ্চ সমস্যাসহ নানা কারণে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড অতীতের তুলনায় এখন অনেকটাই কমে গেছে। এসব সমস্যা সমাধানে ও সরকারিভাবে সংস্কৃতিপল্লী গড়ে তোলার দাবি জানিয়ে শরীরের জামা খুলে রঙ মেখে শিকল পড়ে খোলা আকাশের নিচে একদল সংস্কৃতিকর্মীদের অভিনব প্রতিবাদ জানিয়েছে।
বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অভিনব প্রতিবাদ করেছে সংস্কৃতিকর্মীরা। এসময় অনসাম্বল থিয়েটারের ব্যানারে নাট্যকর্মীরা শরীরের জামা খুলে রঙ মেখে শিকল পড়ে খোলা আকাশের নিচে মঞ্চস্থ করে পারফর্মিং আর্ট ‘নীলকণ্ঠ কথন’। এতে তারা অনসাম্বল থিয়েটারের নিজস্ব মহড়া কক্ষ ও সাংস্কৃতিকপল্লী গড়ে তোলার দাবি জানান। পরে একই দাবিতে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হকের কাছে স্মারকলিপি পেশ করে সংস্কৃতিকর্মীরা।
অনসাম্বল থিয়েটারের সভাপতি আবুল মনসুর বলেন, সংস্কৃতি অঙ্গনে নানা সমস্যা সত্ত্বেও এই জেলায় গান-নৃত্য-নাটক ও আবৃত্তি চর্চা করে যাচ্ছে ছোট-বড় প্রায় শ-খানিক সাংস্কৃতিক সংগঠন। সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে তারা ফুটিয়ে তোলেন ময়মনসিংহের ইতিহাস-ঐতিহ্য। কিন্তু পৃষ্ঠপোষকতা ও সুযোগ-সুবিধার অভাবে দিনদিনই হারিয়ে যাচ্ছে বেশিরভাগ সংগঠন। দুই-একটি যাও অস্থায়ী কার্যালয় নিয়ে সংস্কৃতি চর্চার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সেখানেও তারা নানাভাবে হচ্ছেন বাধাগ্রস্ত।
তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি আমাদের মহড়া কক্ষ উচ্ছেদ করে দেয়া হয়েছে। এখন আমাদের মহড়া করার জন্য আর কোনো জায়গা নেই। যদি আমাদের একটি জায়গা লিজ বা বরাদ্দ দেয়া না হয় তাহলে আমাদের সাংস্কৃতিক চর্চা বন্ধই হয়ে যাবে। একইসাথে সরকারিভাবে সংস্কৃতিপল্লী গড়ে তোলার দাবি জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, আমরা ইতিমধ্যেই সাংস্কৃতিক কর্মীদের কাছ থেকে বিভিন্ন দাবি দাওয়া পেয়েছি। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সংস্কৃতি পল্লী করা। আমরা এ দাবিটি নিয়ে সংষ্কৃতি প্রতিমন্ত্রীর কাছে যাবো। আশাকরি তিনি সংস্কৃতিপল্লী গড়ার উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ময়মনসিংহ নগরীর কাচারিঘাট এলাকায় সরকারি জায়গায় গড়ে উঠা কয়েকটি স্থাপনা উচ্ছদ করা হয়। এই উচ্ছেদ অভিযান চলাকালে কয়েকটির সাংস্কৃতিক চর্চা কেন্দ্র সরকারি জায়গা থেকে উচ্ছেদ হয়। এসময় জেলার অন্যতম সক্রিয় নাট্য সংগঠন অনসাম্বল থিয়েটারসহ কয়েকটি সংগঠনের কার্যালয় ভেঙে ফেলা হলে শুরু হয় নানা আলোচনা-সমালোচনা।
আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি জাগো বুলেটিনকে জানাতে ই-মেইল করুন- news.jagobulletin@gmail.com
