গত (৪ অক্টোবর) নবমী তিথি সম্পন্ন হয় নবমী তিথি আসা মানেই যেন, ‘দুর্গা মায়ের বিদায়য়ের ঘণ্টা বাজতে শুরু করে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ (৫ অক্টোবর) বিজয় দশমী শেষ দিন তারপর আবার এক বছরের অপেক্ষা। এক বছর পরে আমার মহামায়া আসবেন পিত্রালয়ে।
ভক্তি, শ্রদ্ধা, আরতি, অঞ্জলি প্রদান ও প্রসাদ বিতরণের মধ্য দিয়ে গত ১অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হয় শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রথম পূজা। পূজার পঞ্চম দিন আজ (৫অক্টোবর) বুধবার দশমী পূজার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয় শারদীয় দূর্গা পূজা।
নবমী তিথির পূজা শেষ হওয়ার পর থেকেই দুর্গা পুজোর শেষ দিন হিসাবে ধরা হয়। নবমী পূজার পরের দিন অর্থাৎ দশমী তিথিতে মর্ত্যলোকের সকল ভক্তদের কাঁদিয়ে কৈলাসের উদ্দেশে রওনা হবেন দেবী।
অন্যদিকে গতকালের নবমী তিথিটিও নানান কারণে ছিলো গুরুত্বপূর্ণ। কেননা নবমী তিথিতে দুর্গার এক স্বরূপ সিদ্ধিদাত্রীর পুজো হয়। শাস্ত্র মতে, সিদ্ধিদাত্রীর কাছে অণিমা, মহিমা, প্রাপ্তি, প্রকাম্য, গরিমা, লঘিমা, ঈশিত্ব ও বশিত্ব নামক আটটি সিদ্ধি রয়েছে। গতকাল, অর্থাৎ ৪ অক্টোবর ছিলো নবরাত্রির মহানবমী তিথি।
হিন্দু শাস্ত্রমতে মহানবমী বা দুর্গা নবমী হল আসুরিক শক্তি বধ করে বিজয়ের দিন।
শ্রী শ্রী চণ্ডী গ্রন্থ থেকে জানা যায়, দেবী দুর্গা রুদ্ররূপ (মহাকালী রূপ) ধারণ করে মহিষাসুর এবং তাঁর তিন যোদ্ধা চণ্ড, মুণ্ড এবং রক্তবিজকে হত্যা করেন। মহানবমী তিথি শুরুই হয় সন্ধিপূজা দিয়ে।
একশত আটটি মাটির প্রদীপ জ্বালিয়ে ও একশত আটটি পদ্মফুল মহানবমী তিথিতে নিবেদন করা হয় দেবীর চরণে। আর ঠিক এই কারণে পূজার মন্ত্রেও সেই বিশেষত্ব উল্লেখ করা হয়েছে ।
এরই মধ্য দিয়ে আজ’ (৫ অক্টোবর) বুধবার বিজয়া দশমীর যথারীতি নিয়ম অনুসরণ করে পূজা করার পর লংগদু উপজেলার হিন্দুরা তাদের দেবীকে বিসর্জন দেন,এইদিন দেখাযায় ধর্মনিষ্ঠ হিন্দুর চোখ অশ্রুসজল হয়ে পড়ে, পুরুষ-নারী ধুপ,দীপ পাখা ইত্যাদির দ্ধারা দেবীকে বিদায় প্রদান করেন, লংগদু উপজেলার ভক্তহিন্দুরা দেবী মূর্তিকে শোভাযাত্রা সহকারে নিকটবর্তী নদী কাপ্তাই লেকে নিয়ে বিসর্জন করেন এবং সকলেই কোলাকুলি ও প্রীতি বিনময়ের মধ্য দিয়ে পূজা সম্পন্ন করেন
লংগদু উপজেলায় ৩ টি পূজা মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে, গতকাল বৃষ্টি উপেক্ষা করেই, মণ্ডপে মণ্ডপে ছিলো উপছে পড়া ভিড়।
লংগদু পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় দাশ বলেন, আমি লংগদু উপজেলার প্রতিটি পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করেছি। লংগদু উপজেলার প্রতিটি পূজা সুশৃঙ্খল ভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাম্প্রদায়িকতার মনোভাবকে বিসর্জন দিয়ে সকল ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে হিন্দু–মুসলিম সবাই মিলে শারদীয় দুর্গোৎসব পালন করছি এবং ভবিষ্যতেও করবো।
লংগদু থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)মুহাম্মদ আরিফুল আমিন লংগদু উপজেলার ৩টি পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, লংগদু উপজেলার প্রতিটি পূজাই সুশৃঙ্খল ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। আমি পূজা চলাকালীন সময়ে প্রতিটি মণ্ডপ পরিদর্শন করেছি। আজ বিজয় দশমীতেও মুর্তি বিসর্জন পর্যন্ত আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেকোনো রকম ঝামেলা প্রতিহত করতে সদা প্রস্তুত ছিলো।
আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি জাগো বুলেটিনকে জানাতে ই-মেইল করুন- jagobulletinbd@gmail.com