ঢাকামঙ্গলবার , ৮ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  1. অপরাধ
  2. আন্তর্জাতিক
  3. আবহাওয়া
  4. কর্পোরেট বুলেটিন
  5. কৃষি সংবাদ
  6. খেলাধুলা
  7. গণমাধ্যম
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জেলা সংবাদ
  11. ঢাকা বিভাগ
  12. ধর্ম ও জীবন
  13. নাগরিক সংবাদ
  14. পদ্মাসেতু
  15. পাঁচমিশালি
আজকের সর্বশেষ সব খবর

শান্তি মিশনে নিহত শরিফুলের বাড়ীতে চলছে শোকের মাতম

সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি
অক্টোবর ৫, ২০২২ ৮:০৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক অপারেশন কার্যক্রম পরিচালনাকালে নিহত সেনা সদস্য শরিফুল ইসলামের নিজ বাড়ী সিরাজগঞ্জের বেলকুচির বাড়ীতে চলছে শোকের মাতম। একমাত্র উপার্জনক্ষম সন্তানকে হারিয়ে পাগল প্রায় মা-বাবা ভাইবোন। আর বিয়ের মাত্র কয়েকদিন পরেই মিশনে গিয়ে মারা যাওয়ায় স্বামীর শোক ভুলতে পারছেনা স্ত্রী সালমা খাতুন। অন্যদিকে, একজন সৎ, দক্ষ ও মেধাবী সৈনিকের মৃত্যু এলাকাবাসীর কেউ মেনে নিতে পারছে না। একজন তরুণ সৈনিকের অকাল মৃত্যুকে শুধু মৃত্যু নয় রাষ্ট্রীয়ভাবে শহীদ মর্যাদা ঘোষনার দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী। 

জানা যায়, সিরাজগঞ্জের বেলকুচি পৌরসভার বেড়াখারুয়া গ্রামের তাত শ্রমিক লেবু শেখের ২ ছেলে ও ১ মেয়ের মধ্যে বড় শরিফুল ইসলাম ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করে। চাকুরিরত অবস্থায় এক বছরের মধ্যেই শান্তিমিশনে মধ্য আফ্রিকায় যান। গত ৩ অক্টোবর (সোমবার) সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে স্থানীয় সময় রাত ৮টা ৩৫ ঘটিকায় (বাংলাদেশ সময় ৪ অক্টোবর) জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনের অপারেশন কার্যক্রম পরিচালনাকালে বাংলাদেশী শান্তি রক্ষীদের একটি গাড়ী ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) বিস্ফোরণে তিন সেনা সদস্য নিহত হয়। এরমধ্যে শরিফুল ইসলামও মারা যায়। মৃত্যুর সংবাদ পাবার পর থেকেই শরিফুলের পরিবারসহ পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অন্যদিকে, বুধবার সকালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সেনা কর্মকর্তারা শরিফুলের বাড়ীতে গিয়ে সমবেদনা জানান এবং পরিবারের কাছে ১লক্ষ টাকা প্রদান করেন। 

সরেজমিনে বেলকুচিতে শরিফুলের বাড়ীতে গিয়ে জানা যায়, সৈনিক শরিফুল ইসলাম মিশনে যাবার কয়েকদিন আগেই সালমা খাতুন নামে এক মেয়েকে বিয়ে করেন। দুজনে ভালমতো দাম্পত্যজীবন বুঝে ওঠার আগেই স্বামীকে হারান স্ত্রী সালমা খাতুন। স্বামীকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পরেছেন সালমা খাতুন। কাঁদতে কাঁদতে সালমা খাতুন জানান মৃত্যুর আগের দিন রাতে তার সাথে কথা হয়েছে। কথা বলতে বলতে বলেছে হুইসেল দিচ্ছে ডিউটিতে যেতে হবে। ফিরে এসে কল করব। তার অপেক্ষায় আমি সারারাত অপেক্ষা করেছি। সকালেই তাকে ইন্টারনেট লাইনে পাইনি। কি হয়েছে ভাবতে ভাবতে প্রতিবেশী ভাবি এসে বলেন আপনার স্বামী মারা গেছে। তিনি বলেন আমার সবকিছু শেষ হয়ে গেলো। আমি কি নিয়ে বেঁচে থাকবো। 

সৈনিক শরিফুলের বাবা লেবু তালুকদার ছেলের ছবি বুকে জড়িয়ে ধরে বলেন, আমার বুকের ধন এভাবে আমাকে ছেড়ে চলে যাবে। এটা ভাবতেই হৃদয়টা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে। তিনি জানান, আমার ছেলেটাই একমাত্র উপার্জনক্ষম ছিল। আমি তাঁত শ্রমিক ছিলাম। এখন বেকার জীবনযাপন করছি। মা পাঞ্জুয়ারা বেগম বিলাপ বিলাপ করতে বলেন, আমার সোনামানিক কদিন আগেই বলেছিল মা তুমি চিন্তা করো না। আমি মিশন থেকে ফিরেই বোনকে বিয়ে দিবো এবং ছোট ভাইকে ভাল একটা কাজে লাগিয়ে দিবো। কিন্তু আমার বুকের মানিকের সে আশা পুরন হলো না। 

স্থানীয় বাসিন্দা মাহমুদুল হাসান শান্ত ও আব্দুর রাজ্জাক তালুকদার জানান, শরিফুল একজন শান্ত প্রকৃতির ছেলে ছিল। ছুটিতে আসলে সবার সাথে সদ্যবহার করত। আর সে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিল। পরিবারটি রক্ষায় সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।  

বেলকুচি পৌরসভার মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজা জানা, শরিফুল একজন মেধাসম্পন্ন সৈনিক ছিলেন। সে বেলকুচির গর্ব। তিনি শহীদ হয়েছেন। তিনি শরিফুল ইসলামকে রাষ্ট্রীয়ভাবে শহীদ মর্যাদা দেয়ার দাবী জানান। একইসাথে পৌরসভার পক্ষ থেকে সার্বিক সহায়তার আশ্বাস দেন এবং বাংলাদেশ সেনা প্রধানকে পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জোর দাবী জানান।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি জাগো বুলেটিনকে জানাতে ই-মেইল করুন- jagobulletinbd@gmail.com