খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় নিজের মেয়েকে তিনবার ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে মোশারফ হোসেন (৩৫) নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় দশ বছর আগে মোশাররফ হোসেন এর সাথে তার স্ত্রী নাজমা আক্তারের বিচ্ছেদ ঘটে। তাদের মেয়ে (১৩) মায়ের সাথে চট্টগ্রামে বড় হচ্ছিলো। সম্প্রতি আবারও সংসার শুরু করেছেন এ দম্পতি। কিন্তু, তাদের মেয়ের অভিযোগ তার বাবা তাকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করেছেন।
জানা গেছে, মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) রাতে মোশারফ নেশাগ্রস্ত অবস্থায় স্ত্রীর সামনেই নিজের মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। পরে, নাজমা মোশারফকে ঘর থেকে বের করে দেন। বুধবার (৫ অক্টোবর) সকালে ঘটনাটি বেলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে জানানো হয়।
ভুক্তভোগী কিশোরীর মা নাজমা আক্তার বলেন, মেয়ে আমাকে অনেকবার বলেছে আমি যখন গরু চড়াতে যাই, বাবা তার সাথে খারাপ ব্যবহার করে। মেয়ে বলতো আমি এই বাড়িতে থাকবো না। কিন্তু আমি তেমন কিছু ভাবিনি। তারপর একরাতে আমি ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় পাশের রুমে ঘুমিয়ে থাকা মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। মেয়ে চিৎকার দিয়ে আমার কাছে চলে আসে। সেই রাতে বুঝতে পারলাম মেয়ে কেনো আমাকে বলতো এই বাড়িতে থাকবো না। তারপর ভেবেছিলাম এই কথা কাউকে জানানো যাবে না। আমি মেয়েকে নিয়ে আবার চলে যাবো। কিন্তু এখন আর গোপন রাখতে পারিনি।
তিনি আরও জানান, বিষয়টি বেলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছে। তবে এখনও মামলা করা হয়নি।
ভুক্তভোগী কিশোরী বলেন, বাবা আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করতো সবসময়। আমাকে খারাপ ভাষায় গালাগালি করতো। মা যখন বাড়িতে থাকতো না তখন বাবা আমার শরীরেও হাত দিতো। রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় মুখে লাইট মেরে শরীরে হাত দিতো। আমি পাশের বাড়িতে চলে যেতাম। রাতে মায়ের সাথে ঘুমাতাম। মায়ের সাথে ঘুমালে মাকে গালাগালি করে বলতো- আমি যেনো মায়ের সাথে না ঘুমাই, পাশের রুমে যেনো ঘুমাই। গত মঙ্গলবার রাতে মায়ের সামনেই আমার কাপড় খুলে ফেলে।
অভিযুক্ত মোশারফ হোসেন বলেন, মেয়ের সাথে আমার কিছুই ঘটেনি। স্ত্রীর সাথে পারিবারিক ঝগড়া ছিলো। মেয়েকে আমি পারিবারিক কাজের জন্য গালাগালি করতাম। রাতে আমরা তিনজন একসাথেই ঘুমাতাম। আমি কখনও মেয়ের শরীরে হাত দেইনি। মা-মেয়ে মিলে আমাকে ফাঁসানোর জন্য এ গল্প তৈরি করেছে।
বেলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রহমত উল্লাহ জানান, ঘটনার বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি। আমি সরেজমিনে গিয়ে আরও জানার চেষ্টা করছি। যদি সত্যতা পাওয়া যায়, তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনায় অপরাধীকে কোনোভাবেই ছাড় দেয়া হবে না বলেও জানান তিনি।
আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি জাগো বুলেটিনকে জানাতে ই-মেইল করুন- jagobulletinbd@gmail.com