আশুলিয়ার কিশোর গ্যাং এর হামলায় নিহত লিখন হত্যা মামলার মূলহোতাসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে রেব-৪। আশুলিয়া থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
আধিপত্য বিস্তার, মাদক সেবন ও পুরোনো আক্রোশের জেরে আশুলিয়ার পলাশবাড়ী এলাকায় কাইচ্চাবাড়ি কিশোর গ্যাং ও গোচারটেক ভাই-ব্রাদার কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ভাই-ব্রাদার গ্যাংয়ের মেহেদিকে বাঁচাতে গিয়ে নির্মমভাবে খুন হন লিখন (১৮)। এরপর কাইচ্চাবাড়ি গ্যাংয়ের সদস্যরা দেশের বিভিন্ন জেলায় গা ঢাকা দেয়। একপর্যায়ে তাদের টাকা ফুরিয়ে গেলে আবার আশুলিয়ায় আসে টাকা সংগ্রহের জন্য। এ সময় র্যাব-৪ এর সদস্যদের হাতে তাঁরা আটক হন।
গ্রেপ্তার করা কাইচ্চাবাড়ি কিশোর গ্যাংয়ের মূল নেতা রনিসহ (১৯) অন্যান্য সদস্যরা হলেন রাকিব (১৮), জিলানী (১৮) ও সোহাগ (১৯)। গতকাল মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালিয়ে আশুলিয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাদের।
আজ বুধবার দুপুরে কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৪ এর অধিনায়ক ডিআইজি মোজাম্মেল হক।
সংবাদ সম্মেলনে রেব-৪ এর অধিনায়ক জানান,আশুলিয়া এলাকায় বেশ কয়েকটি কিশোর গ্যাং রয়েছে, যারা এলাকায় ইভটিজিং, ছিনতাই, মাদক সেবন ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সার্বক্ষণিক দাঙ্গা হাঙ্গামায় লিপ্ত থাকে। এদের ব্যাপারে রেবের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
গত ৪ জুলাই আশুলিয়ার পলাশবাড়ীর ইস্টার্ন হাউজিংয়ে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত হয় সিরাজগঞ্জের আব্দুল মজিদের ছেলে লিখন। সে পলাশবাড়ী এলাকায় কাঠমিস্ত্রির কাজ করত। আহত অবস্থায় লিখনকে উদ্ধার করে সাভারের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন ৫ জুলাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় মামলা করেন লিখনের চাচা শরিফুল ইসলাম বাবু। মামলায় রনিসহ আরও কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
রাজধানীর কাওরান বাজার রেব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে রেব ৪ এর অধিনায়ক জানান, আশুলিয়ার কাইচ্চাবাড়ি গ্যাং ও গোচারটেক ভাই বেরাদার গ্যাং নামে দুটি পৃথক কিশোর গ্যাং রয়েছে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জেরে কেন্দ্র করে খুন হয় নিখিল। আশুলিয়া এলাকায় এই দুটি গ্যাং ছাড়াও আরও কয়েকটি কিশোর গ্যাং আছে।
তিনি জানান, আসামীরা ইভটিজিং, ছিনতাই, মাদক সেবন ও আধিপত্য বিস্তারে একাধিক অপকর্মের সাথে লিপ্ত।
তিনি আরও বলেন, এই এলাকায় এখন পর্যন্ত বিভিন্ন গ্যাংয়ের অন্তত পঞ্চাশ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সবাইকে গ্রেপ্তার করা হবে। আধিপত্য বিস্তার, মাদক সেবন ও পুরোনো আক্রোশের জেরে আশুলিয়ার পলাশবাড়ী এলাকায় কাইচ্চাবাড়ি কিশোর গ্যাং ও গোচারটেক ভাই-ব্রাদার কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ভাই-ব্রাদার গ্যাংয়ের মেহেদিকে বাঁচাতে গিয়ে নির্মমভাবে খুন হন লিখন (১৮)।
কিশোর গ্যাংয়ের অন্য গ্রুপের বিষয়েও অনুসন্ধান চলছে, এই ধরনের অপরাধীদের বিরুদ্ধে রেবের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান মোজাম্মেল হক।
আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি জাগো বুলেটিনকে জানাতে ই-মেইল করুন- news.jagobulletin@gmail.com