সাভারে ডাইনেস্টি গ্রুপের ৩টি পোশাক কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে ও আইনগত পাওনার দাবিতে কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকরা।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে সাভারের আউকপাড়া এলাকায় অবস্থিত ডাইনেস্টি গ্রুপের ডাইনেস্টি সোয়েটার লিমিটেড, ডাইনেস্টি নিট ফ্যাশন লিমিটেড ও মিলিনিয়াম সোয়েটার লিমিটেডের প্রায় ১ হাজার ৫০০ শ্রমিক বিক্ষোভ শুরু করেন।
শ্রমিকরা জানান, কারখানা ৩টি মালিক বিক্রি করে দিয়েছেন, এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে আইনগত পাওনা বুঝে পাওয়ার দাবিতে গত মঙ্গলবার ও বুধবার ২ দিন শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করেন। কর্মবিরতির জেরে আজ কারখানা ৩টি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের ঘোষণা দিয়ে কারখানার মূল ফটকে নোটিশ টানিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ। তাই কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে ও আইনগত পাওনার দাবিতে কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে তারা বিক্ষোভ করছেন।
এ ব্যাপারে কারখানার শ্রমিক আল-আমীন বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষ আমাদের না জানিয়ে কারখানা বিক্রি করে দিচ্ছে। আমাদের আইনগত পাওনাদি না দেওয়ার জন্য তারা কারখানা বিক্রির খবর গোপন করছে। কোনো কর্মকর্তা বলছেন কারখানা বিক্রি হয়েছে। কেউ বলছেন হয়নি। আবার কেউ বলছেন অর্ধেক বিক্রি করা হয়েছে। আমরা অনিশ্চয়তায় ভুগছি। কেউ বলছেন কারখানার অংশীদার নেওয়া হচ্ছে।
একই কারখানার শ্রমিক সালমা বলেন, আমি প্রায় পাঁচ বছর ধরে চাকরি করছি। কারখানা বিক্রি করলে আমাদের পাওনাদি বুঝিয়ে দিয়ে বিক্রি করতে হবে। আমাদের পাওনাদি না দিয়ে, কোনো রকম সিদ্ধান্ত না জানিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ কারখানা বিক্রি করেছে। আমরা প্রতিবাদ করায় কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
টেক্সটাইল গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সাভার-আশুলিয়া-ধামরাই আঞ্চলিক কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রতন হোসেন মোতালেব বলেন, ‘কারখানাটি মালিক বিক্রি করে দিয়েছেন। যেহেতু মালিকানা পরিবর্তন হচ্ছে, শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকরা যে পাওনা পাওয়ার কথা, তা পাওয়ার দাবিতে ২ দিন তারা কর্মবিরতি পালন করেন। কর্মবিরতির কারণে কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারায় তা বন্ধ ঘোষণা করেন। তাই শ্রমিকরা কারখানার সামনে অবস্থান নিয়েছেন।’
এ বিষয়ে জানতে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান জাহিদ আকবর চৌধুরীর নম্বরে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ধরেননি। কারখানার অ্যাডমিন ম্যানেজার সাফিউজ্জামানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এমনকি ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও তার কোনো সাড়া মেলেনি।
শিল্পপুলিশ-১ এর উপ-পরিদর্শক মো. রাশেদ বলেন, শ্রমিকরা কারখানার সামনে অবস্থান নিয়েছে। আমরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ কারখানা কতৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। কর্তৃপক্ষের ভাষ্য তারা কারখানা বিক্রি করেনি। কারখানা চালাতে না পেরে অংশীদার নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। তবে এ ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত কিছু বলতে পারবো না। আইন-শৃঙ্খলার বিষয়টি স্বাভাবিক রয়েছে।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আফজাল হোসেন বলেন, ‘শ্রমিকদের মাঝে কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। বিষয়টি সমাধানে কাজ করছি।’
আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি জাগো বুলেটিনকে জানাতে ই-মেইল করুন- news.jagobulletin@gmail.com