জেলার বন্যা পরিস্থিতি আরো উন্নতি হয়েছে। বৃষ্টিপাত না থাকায় স্বস্তি ফিরেছে জনজীবনে। নেমে গেছে বন্যার পানি। সকাল থেকে বসতবাড়িতে ফিরতে শুরু করেছেন মানুষজন। জীবন যাত্রাও স্বাভাবিক হয়ে আসছে।
পানি নেমে যাওয়ায় জমে থাকা কাদা, ময়লা, আবর্জনা সরিয়ে ঘরবাড়ি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করছেন ভুক্তভোগী মানুষেরা। পানি নামতে শুরু করায় সর্বত্র ক্ষতের চিত্র দৃশ্যমান হচ্ছে। পানির স্্েরাতে ভেসে গেছে সেতু,ভেঙ্গে গেছে সড়ক। ভেসে গেছে পুকুরে মাছ ও নষ্ট হয়ে গেছে ফসলের ক্ষেত। চেঙ্গী ও মাইনী নদীর পানি কমায় জেলা সদর, দীঘিনালা, পানছড়ি ও মহালছড়িতে নদীর তীরবর্তী বসতবাড়ি ও কৃষি জমি ছাড়া অন্যান্য জায়গা থেকে পানি নেমে গেছে। পানি নামার পর ক্ষত চিহ্ন ফুটে উঠছে।
এদিকে পানি কমে যাওয়ায় ঘরবাড়ি, দোকানপাট পরিস্কার করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন স্থানীয়রা।
খাগড়াছড়ি সবজি বাজারের দোকানদার মো. ফরিদুল ইসলাম বলেন, রাতের শেষ ভাগে পানি নেমে গেছে।সকাল থেকে দোকানের সকল কর্মচারি মিলে পরিস্কার করতে চেষ্টা করছেন। দোকানের ভিতর অনেক কাদামাটি জমে আছে। খাগড়াছড়ি বাজারের পাইকারি বয়লার মুরগির ব্যাবসায়ী মো. হাবিবুর রহমান খান জানান, বন্যার কারণে তার প্রায় দশ হাজারের মতো একদিনের মুরগির বাচ্চা মারা গেছে। খাগড়াছড়িতে আনার পথে বাগানবাজার এলাকায় বন্যার পানিতে গাড়ি আটকে বাচ্চাগুলো মরে গেছে।
খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাকসুদুর রহমান জানিয়েছেন, জেলার রামগড় উপজেলার নাকাপা এলাকায় খাগড়াছড়ি- ঢাকা সড়কের উপর পাহাড় ধ্বসের কারণে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়লে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহায়তায় সড়কের দুই দিক থেকে মাটি সরানো হয়েছে । বর্তমানে সড়ক যোগাযোগ চালু করা হয়েছে ।অপর দিকে পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অসংখ্য পরিবার।তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কত এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি উন্নয়ন সংস্থাগুলো। পর পর পাঁচ দফা বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হলেও ত্রাণ প্রাপ্তি নিয়ে খুশি সাধারণ মানুষ।
বন্যার পর সর্ব শক্তি নিয়ে মাঠে ছিল,বাংলাদেশ সেনাবাহিনী,বিএনপি ও বৈষম্যবিরোধী বিরোধী ছাত্ররা। সেনাবাহিনীর সদস্যরা বন্যার পানিতে আটকা পড়াদের উদ্বার করেছে। সে সাথে দুর্গত এলাকার মানুষের মাঝে সেনাবাহিনী,বিএনপি ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে।
বিশুদ্ধ পানির সংকট দূর করতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে পানি বিশুদ্ধ করণ ট্যাবলেট বিতরণ করছে।রাস্তায় ধসে পড়া মাটি সরিয়ে সড়ক যোগাযোগ সচল করার কাজ করছে সেনাবাহিনী ও সড়ক বিভাগ। বিচ্ছিন্ন করা সংযোগ লাইন চালু করছে বিদ্যুত বিভাগ। মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে ৫দফা বন্যায় খাগড়াছড়ি জেলার লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ,ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জমির ফসল। বন্যা দুর্গতরা জানান, বিগত ৪০ বছরেরও তারা এমন পানি দেখেননি। এদিকে কর্মকর্তারা দুর্গম পাহাড়ী এলাকায় কাজ করছে।তবে মোবাইল নেটওয়াক না থাকায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।এদিকে ত্রাণ সহায়তা ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর আকুতি আসছে বিভিন্ন দিক থেকে।
আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি জাগো বুলেটিনকে জানাতে ই-মেইল করুন- jagobulletinbd@gmail.com