টাঙ্গাইলের নাগরপুরে দপ্তিয়র ইউনিয়নের কান্দাপাচুরিয়া এলাকায় প্রায় ৫৫ বছর পুরোনো ৪৭ নং কান্দাপাচুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রবেশের সড়ক না থাকায় যাতায়াতে বিড়ম্বনার শিকার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এবং বিদ্যালয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের পরিবর্তে নতুন ভবন নির্মাণকাজ দফায় দফায় ব্যাহত হচ্ছে। একদিকে চলাচলে কষ্ট অপরদিকে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান কার্যক্রম সব মিলিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও বিদ্যালয়ের সাথে সংশ্লিষ্টরা ব্যাপক নাজেহাল অবস্থায় রয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ব্যাক্তি মালিকানায় থাকা জায়গায় দুইপাশে সরু বাঁশের বেড়া দিয়ে ছোট পরিসরে বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথ রয়েছে। বর্তমান শুকনা মৌসুমে মোটরসাইকেল নিয়ে যাতায়াত কষ্টসাধ্য। এছাড়াও বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণকাজে ব্যাপক ধীরগতি পরিলক্ষিত হয়েছে কারণ নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে ভারী যানবাহন বিদ্যালয় পর্যন্ত যাওয়া প্রায় অসম্ভব। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, বন্যা আসলে প্রথমেই এই পথ প্লাবিত হয় এবং বিদ্যালয়ে নৌকা নির্ভর যাতায়াত ব্যবস্থা গড়ে উঠে। এখানে সড়ক নিয়ে বিদ্যালয়-ঠিকাদার-জমির মালিক বৃন্দদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে দপ্তিয়র ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য নান্নু প্রামাণিক বলেন, আমি এমপি মহোদয় বরাবর লিখিত দিয়েছি এখানে ভূগোলহাট এলাকা থেকে বিদ্যালয় পর্যন্ত একটি সড়ক নির্মাণের জন্য। বিদ্যালয়ে সরাসরি যাতায়াতের নিজস্ব সড়ক না থাকায় অনেক অসুবিধা হচ্ছে। বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য নির্মাণ সামগ্রী নেওয়া যাচ্ছে না। ব্যাক্তি মালিকানা জায়গা হওয়ায় মালবাহী গাড়ি চলাচলে বাধা দেওয়া হচ্ছে। ফলে কয়েকদিন যাবৎ নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি খালেদা আক্তার জানায়, অত্র বিদ্যালয়ে যাতায়াতের জন্য সড়কের সংকট। এ বিষয়ে আমি নাগরপুর ইউএনও মহোদয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এছাড়াও সাবেক সভাপতি মোঃ নজরুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, আমি সভাপতি থাকা অবস্থায় বার বার চেষ্টা করেও বিদ্যালয়ের নিজস্ব সড়ক নির্মাণ করতে সফল হয়নি। এখন ব্যাক্তি মালিকানা জায়গা দিয়ে চলাচল করতে হয়। আমি চাই বিদ্যালয়ের নতুন সড়ক নির্মাণ হোক এবং নতুন ভবন নির্মাণ কাজ সুন্দর ভাবে শেষ হোক।
কান্দাপাচুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মো: শরীফুল ইসলাম বলেন, আমাদের এই বিদ্যালয়ে চলাচলের কোনো নির্দিষ্ট সড়ক নেই। শিক্ষার্থীদের চলাচলের জন্য একটি সড়ক ব্যাপক প্রয়োজন। এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার কে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণকারী ঠিকাদার মোঃ আসাদ মুঠোফোনে জানায়, সড়ক না থাকায় স্কুল ভবন নির্মাণ সামগ্রী ঠিকমতো নেওয়া যাচ্ছে না। বর্তমান সড়কটি ব্যাক্তি মালিকানায় থাকায় একাধিকবার আমি বাধাপ্রাপ্ত হয়েছি এবং মালামাল না নেওয়ার জন্য হুমকিও পেয়েছি। পরবর্তীতে নির্মাণ সামগ্রী নিতে সড়কের জমির মালিককে নগদ অর্থ দিতে বাধ্য হয়েছি। এ বিষয়ে ইউএনও মহোদয়ের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি। মূলত আমি ঝামেলা ছাড়াই বিদ্যালয় নতুন ভবন নির্মাণ কাজ শেষ করতে চাচ্ছি।
বিদ্যালয়ে যাতায়াতের সড়ক নেই ও নতুন ভবন নির্মাণ কাজে ধীরগতি প্রসঙ্গে নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, আমি এ বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়াও উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও নির্বাহী প্রকৌশলী কে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।