ঢাকাবৃহস্পতিবার , ২১ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  1. অপরাধ
  2. আন্তর্জাতিক
  3. আবহাওয়া
  4. কর্পোরেট বুলেটিন
  5. কৃষি সংবাদ
  6. খেলাধুলা
  7. গণমাধ্যম
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জেলা সংবাদ
  11. ঢাকা বিভাগ
  12. ধর্ম ও জীবন
  13. নাগরিক সংবাদ
  14. পদ্মাসেতু
  15. পাঁচমিশালি
আজকের সর্বশেষ সব খবর

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এগিয়ে আসছে দুর্বার তারুণ্য

জাগো বুলেটিন
এপ্রিল ১৬, ২০২৩ ৪:০৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

“স্মার্ট বাংলাদেশ প্রজন্মের স্বপ্ন, স্মার্ট বাংলাদেশ ছাত্রসমাজের রায়”

‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ ছাত্রসমাজের অভিন্ন প্রত্যাশা। অসাধারণ এই রুপকল্প ইতিহাসের বাঁকবদলের হাতিয়ার, বাংলাদেশের অসাধারণ সাফল্যযাত্রার নবতর পালক, তারুণ্যের প্রাণের স্পন্দন। বৈশ্বিক উন্নয়ন ইতিহাসের রোল মডেল, বাংলাদেশের নবপরিচয়ের রুপকার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার লড়াই-সংগ্রামে অবিচল থাকা ছাত্রসমাজের দেশপ্রেমের অংশ, সঠিক রাজনৈতিক কর্তব্য, ভবিষ্যতের স্বপ্নের স্তম্ভ।ডিজিটাল বাংলাদেশ ভিশন 2021 থেকে অব্যাহত রেখে, বাংলাদেশ সরকার 2041 সালের মধ্যে চরম দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং উচ্চ আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জনের স্পষ্ট লক্ষ্য নিয়ে ভিশন 2041 গ্রহণ করেছে। এটি আজকের কর্ম এবং কাজ যা নির্ধারণ করবে কত তাড়াতাড়ি আমরা লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হব।

আজকের যুগের ডিজিটাল বিপ্লব, যাকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব শব্দটির উৎপত্তি ২০১১ সালে, জার্মান সরকারের একটি হাই টেক প্রকল্প থেকে। একে সর্বপ্রথম বৃহৎ পরিসরে তুলে নিয়ে আসেন ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা এবং চেয়ারম্যান ক্লস শোয়াব।

ইন্টারনেটের আর্বিভাবে তৃতীয় শিল্পবিপ্লবের পর তথ্যপ্রযুক্তির বাধাহীন ব্যবহার ও দ্রুত তথ্য স্থানান্তরের মাধ্যমে গোটা বিশ্বের জীবন প্রবাহের গতি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ইন্টারনেট অব থিংকিং (আইওটি) ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বাড়বে যেটি কিনা মানব সম্পদের বিকল্প হিসেবে কাজ করবে। এই ডিজিটাল বিপ্লবের ছোয়ায় উৎপাদন ব্যবস্থার ঘটবে অকল্পনীয় পরিবর্তন। যেখানে উৎপাদনের জন্য মানুষকে যন্ত্র চালাতে হবেনা, বরং যন্ত্র সয়ংক্রীয়ভাবে কর্ম সম্পাদন করবে এবং এর কাজ হবে আরও নিখুঁত ও নির্ভূল।চিকিৎসা, যোগাযোগ, প্রকাশনা ইত্যাদি ক্ষেত্রেও এর প্রভাব হবে অত্যন্ত জোরালো।

বাংলাদেশে এই বিপ্লবের সুযোগ গ্রহন করতে হলে আগাম ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি আইওটি,ব্লকচেইন ও রোবটিক্স ইত্যাদির ব্যবহার করতে দ্রুত কৌশলগত পরিকল্পনা করতে হবে। ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের সুযোগকে কাজে লাগাতে হলে আমাদের প্রধানতম লক্ষ্য হতে হবে ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী সুদক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টি, আর এজন্য প্রয়োজন হবে শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন।

বাংলাদেশে বর্তমানে তরুণের সংখ্যা ৪ কোটি ৭৬ লাখ যা মোট জনসংখ্যার ৩০%। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আগামী ৩০ বছর জুড়ে তরুণ বা উৎপাদনশীল জনগোষ্ঠী সংখ্যাগরিষ্ঠ থাকবে। বাংলাদেশের জন্য ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের সুফল ভোগ করার এটাই সব থেকে বড় হাতিয়ার। জ্ঞানভিত্তিক এই শিল্প বিপ্লবে প্রাকৃতিক সম্পদের চেয়ে দক্ষ মানবসম্পদই হবে বেশি মূল্যবান। ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে বিপুল পরিমাণ মানুষ চাকরি হারালেও এর বিপরীতে সৃষ্টি হবে নতুন ধারার নানাবিধ কর্মক্ষেত্র।

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ, ইন্টারনেট ও অন্যান্য প্রযুক্তির মধ্যে অব্যাহত যোগাযোগ রক্ষা করতে হবে। প্রতিনিয়ত প্রযুক্তি যন্ত্রগুলো আপডেট করার পাশাপাশি প্রযুক্তির নিরাপত্তা ঝুঁকি আপডেটের মাঝে সমন্বয় সাধনের জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।

মানবতার বিকাশ, জনমুখী উন্নয়ন ও প্রগতিতে নেতৃত্বদানের উপযোগী, মননশীল, যুক্তিবাদী, নীতিমান, কুসংস্কারমুক্ত, পরমতসহিষ্ণু, অসাম্প্রদায়িক, দেশপ্রেমিক ও কর্মকুশল নাগরিক গড়ে তোলা।

চতুর্থ শিল্পবিপ্লব হবে প্রযুক্তিগতভাবে দক্ষ জনশক্তিসম্পন্ন রাষ্ট্রের জন্য বিশাল সম্ভাবনা, দক্ষতার মাধ্যমে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার অপার সুযোগ।

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে প্রবেশ করেছি আমরা। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের অন্যতম প্রধান প্রভাব হলো মানুষের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি। এআই, রোবোটিক্স, আইসিটি, থ্রি-ডি প্রিন্টিং এবং কোয়ান্টাম কম্পিউটিং অটোমেশনের মতো প্রযুক্তি আমাদের পেশাগত জীবনকে করে তুলেছে গতিময় এবং চ্যালেঞ্জিং। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ দূরদর্শী উদ্যোগ নিতে হবে এখনই। মনে রাখতে হবে, অতি আধুনিক যন্ত্র ও প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে মানুষ যখন মানুষের বিকল্প উদ্ভাবন করে; তখন একঘেয়ে, অলস, নির্বোধ মানুষ কর্মক্ষেত্র থেকে ছিটকে পড়ে কর্মহীন হয়ে যায়। এ সময়ই স্বল্পপুঁজির দেশগুলোর জনগোষ্ঠীর বিশাল অংশ চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়ে যায়। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব প্রযুক্তিগতভাবে দক্ষ জনশক্তিসম্পন্ন দেশের জন্য বিশাল সম্ভাবনা। তাই দক্ষতার মাধ্যমে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার অপার সুযোগ।

বাঙালির ভাত ও ভোটের অধিকারে লড়াই করা শেখ হাসিনার পথ কখনোই মসৃণ ছিল না। তিনি কণ্টকাকীর্ণ পথের নাবিক। বৈশ্বিক সংকটের কারণে বর্তমান সময় সে পথের খানিক যাত্রী। কাজেই এই সময়টায় আত্মবিশ্বাস, উদ্ভাবনমুখী আচরণ ও পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানো জরুরি। সঙ্গে অর্থনীতিকে শক্তিশালী ও গতিশীল করতে নিজেদের উৎপাদন এবং উৎপাদিত পণ্যের ব্যবহার, ব্র্যান্ড ভ্যালু অবশ্যই তৈরি করতে হবে। এই অভ্যাস, আচরণই আগামীর আত্মনির্ভরশীল অর্থনীতির ভিত রচনা করবে। রুখে দিবে অপপ্রচারকারী ও শত্রুর মুখ।

আপনজন শেখ হাসিনার এই ছুটে চলার আহ্বান, নির্দেশ পোস্টার, স্লোগান ও বক্তৃতার খপ্পর থেকে প্রায়োগিক জীবনে আনতে হবে। সর্বস্ব বিসর্জন কিংবা ধার করে ‘ঘি’ খাওয়ার তাণ্ডবকারীদের রুখে দিতে হবে। কারণ, বেলাশেষে বাঙালি এই সিন্ধু পাড়ের মেয়ের দিকেই তাকিয়ে রয়, স্বপ্ন বোনে।

সমসাময়িক রাজনীতিবিদের মাঝে শেখ হাসিনা যে অনন্য তা আরও স্পষ্টতর হয়। ভিন্নভাবে বললে, বেহুলা যেমন দংশিত স্বামীর প্রাণের দায়িত্ব একাই বয়ে নিয়ে চলেছেন ঠিক তেমনি উপার্জন, সঞ্চয়ের পূর্বে ধার করে, চুরি করে খরচকারী অংশের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শেখ হাসিনা একাই লড়াই জারি রেখেছেন। আগামী বছরের সম্ভাব্য বৈশ্বিক মন্দায় দেশের মানুষ যেন কষ্ট না পায় সেজন্য তিনিই প্রথম সঞ্চয়ের আহ্বান জানিয়েছেন। ভূমিকে ফেলে না রেখে ফলন উপযোগী করার আহ্বান করেছেন।

বৈশ্বিক বাস্তবতায় প্রতিপক্ষকে ঘায়েল ও নিজের অংশের প্রবল আত্মবিশ্বাস বাড়াতে গুজব, অপপ্রচার এক ধরনের হাতিয়ার। কর্মক্ষেত্র কিংবা ঘরে-বাইরে এই ধরনের আচরণ সংক্ষিপ্ত আকারে দৃশ্যত হলেও রাজনীতির মঞ্চে এর বহুল ব্যবহার দেখা যায়। মূলত এগিয়ে থাকা অংশকে ঘায়েল করতেই এর বেশি ব্যবহার ঘটে। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে চলা বাংলাদেশ এখন সেই হাতিয়ার সম্মুখে লড়াই করছে।

উপমহাদেশীয় রাজনীতিতে রক্তপাত ও ষড়যন্ত্রের ইতিহাস প্রোথিত। শেখ হাসিনা সেই নীরব আত্মবিশ্বাসের নাম, যিনি এই ঘাতক ধারাকে একক সাহসে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাজনীতিকে জনগণ ও উন্নয়নমুখী করেছেন। বিস্তৃত অর্থে, বাঙালির শান্ত সাহস শেখ হাসিনার একক রাজনৈতিক দর্শন ও কর্মতৎপরতায় দেশের রাজনীতি ষড়যন্ত্র ও রক্তপাতের বৃত্ত অতিক্রমমুখী।

শুধু তাই নয়, বঙ্গবন্ধু পরবর্তী রাজনীতিতে উন্নয়নমূলক ম্যান্ডেট এবং জনগণই যে মূল, সেই আখ্যানও তিনি পুনঃরচনা করেছেন। তাই চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের এই রাজনীতিতে বাঙালির রাজনৈতিক দর্শন অদম্য শেখ হাসিনা হওয়াটাই যৌক্তিক।

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের ভাষায় ‘টার্গেট অডিয়েন্স’ করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী এগোনো জরুরি। ছাত্রসংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগের এই কাজ করার সুযোগ আছে। যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এখন সংস্কৃতি চর্চামূলক বিভাগ খোলা হয়েছে এবং সেখানকার শিক্ষার্থীরাও ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। কাজেই এ ধরনের কাজগুলোকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।

আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘অপশক্তি, দুরাশক্তি, বিরোধীশক্তি ও ঠগীর উত্তরসূরিরা একজোট হয়ে শেখ হাসিনাকে মোকাবিলা করতে চাইছে। এর কারণ একটাই, শেখ হাসিনা ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ নিয়ে এগোতে চায়। অর্থাৎ লুটেরাদের একক চ্যালেঞ্জ ‘দ্য ওয়েল ফিনিশার’ শেখ হাসিনা। অদম্য শেখ হাসিনা দেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে দিয়েছেন। এখন প্রয়োজন সব প্রোপাগান্ডা বা গুজব রুখে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়া। এও সম্ভব এবং তা ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ে।

তারুণ্যে বুনি স্বপ্ন-সাহস
তারুণ্যে রাখি বিশ্বাস,
তারুণ্য মানেই হার না মানার দৃঢ় প্রত্যয়
তারুণ্যেই হবে বঙ্গবন্ধুকণ্যার বিজয়!

তারুণ্যের গণজোয়ারের ম্যান্ডেটের উপর ভর করে, গণতন্ত্রের মানসকণ্যা, সোনার বাংলার উন্নয়ন কণ্যা, রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিজয়।

স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজ হাতে গড়া, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে সোনার মানুষ গড়ার পাঠশালা বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। বায়ান্নর ভাষার অধিকার, বাষট্টির শিক্ষার অধিকার, ছেষট্টির বাঙালির স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা, ঊনসত্তরের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থানসহ স্বাধীনতা, স্বাধিকার ও গণতান্ত্রিক সকল আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার অগ্রগামী শক্তি ছিল বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।

শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রথম ও সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। পাশাপাশি যেকোনো জাতীয় ও রাজনৈতিক সঙ্কটে, দুঃসময়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আবির্ভূত হয়েছে আলোকবর্তিকা হয়ে, পথ দেখিয়েছে মুক্তির। বঙ্গবন্ধু কন্যার ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের পর দেশরত্নের আরেক যুগান্তকারী ধারণা ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নে প্রযুক্তি দক্ষ নাগরিক, উন্নত আধুনিক বাংলাদেশ গড়ায় নেতৃত্ব দিবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ. উচ্ছ্বাস , আবেগ, ভালবাসার ত্রৈধ বিন্দু বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম ফরাজি ও সাধারণ সম্পাদক এস এম আক্তার হোসাইন এর স্মার্ট নেতৃত্বে হয়ে উঠছে আগামীর তরুণ প্রজন্মের স্মার্ট সোসাইটির স্মার্ট আইকনিক ছাত্রলীগ।

এই প্রত্যয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে প্রতিদিন কর্মীসভা হচ্ছে এতে করে স্মার্ট রাজনীতির বহিঃপ্রকাশ ঘটানোর জন্য নতুন নতুন আইডিয়ায় আগাচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।

রাজনীতিবিমুখ প্রজন্ম তৈরির একটা গোপন অথচ সুদূরপ্রসারী চিন্তা আছে। এর মূল দিক হলো, সৎ ও যোগ্যদের সরিয়ে ভোগের সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করা যাবে, এমন পুতুল বসানো। পাকিস্তান আমলে বঙ্গবন্ধু এবং স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু-পরবর্তী সময়ে তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা এই দুরভিসন্ধিমূলক আচরণের মুখোমুখি হয়েছেন এবং এর বিপক্ষে লড়াই জারি রেখেছেন।

রাজনীতি মানুষের জীবন নিয়ন্ত্রণ করে। কাজেই সর্বোচ্চ ও মহতী এই স্থানে পাগল, উন্মাদ কিংবা মুখরোচক মিথ্যার সংস্কৃতি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে পারলেই পাকিস্তানি ভাবধারায় দেশ গঠন করা যাবে। এমন চিন্তা থেকেই একদিকে ‘আই হেইট পলিটিকস’ প্রজন্ম এবং অন্যদিকে রগ কাটা, কাটা রাইফেলধারী ও বোমার ক্লাসকারী হিংস্র অংশ তৈরির চেষ্টা প্রবহমান, দৃশ্যমান।

রাজনীতিতে ঘাত-প্রতিঘাত সহ্যের মধ্য দিয়েই নেতৃত্ব নির্মিত হয়। বহু মত-পথের সংস্কৃতিকে সমন্বয় ও গ্রহণ করার শিক্ষা তৈরি হয়। যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সক্রিয় রাজনীতি নেই, সেখানে মৌলবাদী আচরণ ও সাম্প্রদায়িকতার ডুবসাঁতারই বাস্তবতা। সেখানে একদিকে রাজনীতিবিমুখ গণবিচ্ছিন্নতা এবং অন্যদিকে চোরা চামড়ার মৌলবাদী দীক্ষা সমান তালে চলে। এ জন্যই বুয়েটের মতো অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও ছাত্রসংসদসহ সব ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনীতি চালু জরুরি। কারণ কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনায় স্বাভাবিক সংস্কৃতি বিনষ্ট অযৌক্তিক।

এ-ও সত্য, বিগত ২০ বছরে রাজনীতি তার আকর্ষণ হারিয়েছে। পেশাভিত্তিক নেতা থেকে শুরু করে সরাসরি রাজনীতি করা নেতা—সবাই একঘেয়েমি আচরণ নিয়ে আছেন। নাটকীয় ঢঙের মুখস্থ বক্তৃতা ও কিছু রুটিন কর্মসূচির বাইরে কর্মীর আগ্রহ ধরে রাখার জন্য বঙ্গবন্ধুর মতো প্রাসঙ্গিক চিন্তার কোনো দ্যোতনা রচনা করতে পারেননি। বিষয়টি এমন যে বার্ধক্যেও সেই তরুণ বয়সের পোস্টার দিয়ে কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন।

এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যতিক্রম। তিনি তারুণ্যকে জয় করার মানস অনুধাবন করতে পারেন। কঠিনেরে ভালোবাসার শপথে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, বঙ্গবন্ধু টানেল, পদ্মা সেতু, মেট্রো রেলের মতো স্থাপনা নির্মাণের সাহস তিনি দেখিয়েছেন। শেখ হাসিনাই সেই অপরাজেয় শক্তি, যিনি শিক্ষা ক্ষেত্রে নকলসহ সরকারি সব চাকরিতে দুর্নীতিমুক্ত অবস্থা সৃষ্টির নজির প্রতিষ্ঠা করেছেন।

সংস্কৃতিগত দিক বিবেচনায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিকড় বহু গভীরে প্রোথিত। সাধক শাহ আবদুল করিমের মতো গুণী শিল্পী এর নেতা ও সেবক ছিলেন। কিন্তু এখন আর কেউ নিজ নিজ অবস্থানে থেকে লড়াই কিংবা সেবা চালিয়ে যেতে চান না। সবাই জনপ্রতিনিধি হতে চান। জনপ্রতিনিধি হওয়া যে হাতের মোয়া নয়, এই চিন্তা সুস্থ রাজনীতির জন্য সংকট ও সংশয়ের। এই সুযোগটাই দেশবিরোধীরা নিচ্ছেন। তাঁরা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে রুট লেভেল পর্যন্ত গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা জারি রেখেছেন।

রাজনীতির আকর্ষণ দুর্বার ও দুরন্ত। সেখানে এর মানে যদি শুধুই মিছিল-মিটিং, স্লোগান এবং কিছু রুটিন কর্মসূচি হয়, তাহলে আগামী দিন তো নয়ই, বর্তমানও সংকটে পড়বে। ভিন্নভাবে বললে, রাজনীতি মানে যদি শুধু এটাই হতো, তাহলে এ দেশ কখনো স্বাধীন হতো না। বঙ্গবন্ধু জনগণের ভাষা বুঝে জনগণের জন্য কাজ করেছেন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনাও সেই চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। কিন্তু সংকটটা হলো, টানা ক্ষমতায় থাকার কারণে রাজনীতিকে পরিশ্রম, ত্যাগ, সংযমের ক্ষেত্রমঞ্চ না ভেবে অনেকেই সহজ মনে করছেন। যার কারণেই এখন কর্মীপ্রাণ সংগঠকের চেয়ে উঠতি নেতার সংখ্যা বেড়েছে। বাণিজ্যিক কিংবা একতরফা ব্যাংকিং প্রসেসের নেতা হয়ে লাভ নেই। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা কর্মী, সমর্থক ও জনগণের সঙ্গে উঠোন বৈঠক, চায়ের কাপে খুনসুটিকারীদের পক্ষে।

আগামী দিনের রাজনীতি ছলাকলার আচরণ কিংবা মুখরোচক মিথ্যার গড়নে চলবে না। কারণ শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণের শপথে স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট, স্মার্ট সোসাইটি হতে যাচ্ছে। কাজেই রাজনীতির পালস বুঝে নতুনত্ব, সততার সৌন্দর্য নিয়ে আসতে হবে। এটা করতে না পারলে আগামী দিনের রাজনীতিতে টেকনোক্রেট মন্ত্রী, আগুন্তুক রাজনীতিবিদ ও রাজনীতিবিমুখতা আরো বাড়বে।

বাঙালির শান্ত সাহস শেখ হাসিনা বর্তমান ও আগামীর নীলকণ্ঠী নীলমণি। তাঁর কল্যাণেই গত ১৪ বছরে রাজনীতিতে শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী, খেলোয়াড়, সংস্কৃতিমনা মানুষের যুক্ত হওয়ার সুযোগ হয়েছে। তবে কেউ কেউ এখনো চান এসব অংশের তিরোধান ঘটুক। কারণ রাজনীতিকে যতই বিচ্ছিন্ন রাখা যাবে, ততই দুর্বৃত্তদের সুবিধা। শেখ হাসিনা ঘন মেঘের মাঝে এক টুকরা রোদ। শত ঝঞ্ঝা, জলোচ্ছ্বাসে আশার বাতিঘর। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীরা এখনো বিষম পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে; যেন রাজনীতিবিদ ও রাজনীতিকে কলুষিত করা যায়।

এ জন্যই একেবারে শুরুতে অর্থাৎ শিক্ষার্থীরাই এদের লক্ষ্যবস্তু। শৈশব-কৈশোরে অবৈধ মতাদর্শ সম্পর্কে অবগত ও আত্মস্থ করাতে নানা রকমের বই পড়িয়ে, দরিদ্রদের মধ্যে অর্থ সহায়তা, টিউশনি দিয়ে, লিখতে যারা পছন্দ করে তাদের লেখার সুযোগ দিয়ে বিপথে নেয়, কাছে টানে। কাজেই প্রলম্বিত মুখস্থ বক্তৃতা, নিয়মিত কর্মসূচির বাইরে মনস্তত্ত্ব বুঝে ক্যারিয়ারকেন্দ্রিক ও কর্মীদের এগিয়ে নেওয়ার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। আগামী দিনের রাজনীতিতে এসবই মানদণ্ড হবে এবং কর্মী-সমর্থকদের কাছে পাবে অপার গুরুত্ব।

 

আব্দুল্লাহ আল জুনায়েদ

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সিএসই বিভাগ ছাত্রলীগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি জাগো বুলেটিনকে জানাতে ই-মেইল করুন- jagobulletinbd@gmail.com