সোনালী রং ধারণ করা বোরো ধান ঘরে তোলা নিয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলার কৃষকরা। ঈদের পর থেকে পুরোদমে কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে। শ্রমিকের পাশাপাশি ১৮ টি কম্বাইন্ড হারভেস্টর দিয়ে ধান কাটা মাড়াই করা হচ্ছে। ঝড়-বৃষ্টির কারণে কিছুটা ক্ষতি হলেও জেলায় এবারও বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষি বিভাগ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র বাসসকে জানায়, খাদ্যে উৎপাদনে উদ্বৃত্ত জেলা জয়পুরহাটে চলতি ২০২১-২০২২ নিবিড় বার্ষিক ফসল উৎপাদন কর্মসূচির আওতায় ৬৯ হাজার ৪ শ ২৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এরমধ্যে রয়েছে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতের ৬৫ হাজার ২ শ ৭৫ হেক্টর ও হাইব্রিড জাতের রয়েছে ৪ হাজার ১৫০ হেক্টর জমি। এতে চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫৫৮ মেট্রিক টন । বর্তমানে কৃষকরা সোনালী রং ধারন করা ধান ঘরে তোলা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে টুকটাক ধান কাটা শুরু হলেও ঈদের পর থেকে পুরোদমে কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে। শ্রমিকের চাহিদা মেটাতে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ কর্মসূচির আওতায় জেলায় এবার ১৮টি কম্বাইন্ড হারভেস্টর দিয়ে ধান কাটা মাড়াই করা হচ্ছে এবং ইতোমধ্যে জেলায় ৪৫ ভাগ বোরো ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে বলে জানায় কৃষি বিভাগ। সদর উপজেলার দোগাছী ইউনিয়ন, জামালপুর ইউনিয়ন, পুরানাপৈল ইউনিয়ন, ধলাহার ইউনিয়ন, বম্বু ইউনিয়ন, আমদই ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মাঠে বোরো ধান পেকে সোনালী বর্ণ ধারন করা ধানের শীষ গুলো হেলে পড়েছে জমিতে। ঝড়-বৃষ্টির কারনে কিছু এলাকায় বোরো ধান পানিতে ডুবে রয়েছে। এর প্রায় ২শ হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানায় কৃষি বিভাগ । কোমরগ্রাম এলাকার কৃষক আজহার আলী, শ্যামপুর এলাকার কৃষক নজরুল ইসলাম জানান, এবার ধানের ফলন খুব ভা লো হয়েছে। প্রকার ভেদে সাড়ে ৮শ থেকে এক হাজার টাকা মণ ধান বিক্রি হচ্ছে বর্তমান বাজারে। জয়পুরহাট সদরে ৫ টি ও কালাই উপজেলায় ৫ টি , ক্ষেতলালে ৩ টি, আক্কেলপুর উপজেলায় ২ টি ও পাঁচবিবি উপজেলায় ৩টি কম্বাইন্ড হারভেস্টর দিয়ে মাড়াই কার্যক্রম চালানোহচ্ছে। কম্বাইন্ড হারভেস্টর মেশিনের মোট মূল্যের অর্ধেক কৃষক দিলেও বাকী অর্ধেক ভূর্তকি হিসেবে দিয়েছে সরকার। জেলায় ধান কাটার জন্য পাশবর্তী জেলা থেকে শ্রমিকরা আসছেন বলে জানান, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ মো: শফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, আবহাওয়া কিছুটা বৈরি থাকলেও চলতি মৌসুমে বোরো ধান কাটা মাড়াই তেমন সমস্যা হচ্ছেনা। জয়পুরহাট জেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ৯ হাজার ১৪৭ মেট্রিক টন ধান ও ২১ হাজার ১২৭ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে বলে জানান, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জ্ঞান প্রিয় বিদুর্শী চাকমা । সরকারি ভাবে এবার ধান ২৭ টাকা কেজি ও চাল ৪০ টাকা কেজি দরে ক্রয় করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি জাগো বুলেটিনকে জানাতে ই-মেইল করুন- news.jagobulletin@gmail.com