দিন দিন জনসম্মুখে বেড়েই চলেছে ধূমপানের মাত্রা। বড় অক্ষরে স্পষ্টভাবে সাইনবোর্ডে দেখা যায়- “ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।” কিন্তু কতটুকু মানছে সাধারণ মানুষ? রাস্তা-ঘাট, দোকানপাট, হাটবাজার, অফিস-আদালত, হাসপাতাল কিংবা শিশুপার্ক সব জায়গায় চলে ধূমপান। দেখার যেন কেউ নেই! সবকিছুকে তোয়াক্কা না করেই অবাধে চলে এ ধূমপান।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, প্রতিবছর বিশ্বে ৮০ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয় তামাক গ্রহণের কারণে। তাদের মধ্যে প্রায় ১২ লাখ মানুষ সরাসরি ধূমপান না করলেও ধূমপায়ীদের সংস্পর্শে থাকার কারণে মারা যাচ্ছেন।
তামাকে শুধু ধোঁয়াই থাকে না, থাকে আরও প্রায় ৭০০০ রকমের বিষাক্ত পদার্থ। যেগুলো বাড়িয়ে দিতে পারে ক্যানসার তৈরির আশঙ্কা। প্রতিনিয়তই পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছেন শিশু থেকে শুরু করে সব শ্রেণি বা বয়সের মানুষ।
সদ্য চান্স পাওয়া ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী তৌহিদুজ্জামান খান এ বিষয়ে জানায়, মানুষ অনুকরণপ্রিয়। পাবলিক প্লেসে ধূমপান এমনকি মিডিয়া জগতে ধূমপানকে এমনভাবে হাইলাইট করা হয় তাতে জুনিয়ররা মনে করে ধূমপান করাই ঠিক। তাছাড়া দেশের অর্থনীতিরও একটা ব্যাপার আছে। পাবলিক প্লেসে ধূমপান করাটা আসলেই দুঃখজনক।
কলেজপড়ুয়া এক শিক্ষার্থী আবির জানায়, যেখানেই যাই সেখানেই শুধু বিড়ি-সিগারেটের ধোঁয়া। আইন থাকলেও কেউ মানে না তো। আমরা ধূমপান না করলেও আমাদের ক্ষতি হচ্ছে।
আরেক তরুণ শুভ্র বলেন, হাসপাতালে মানুষ যায় চিকিৎসা নিতে। কিন্তু সেখানেও যখন দেখি কেউ অবাধে ধূমপান করছে তখন নিজের কাছেই খারাপ লাগে। সম্প্রতি এক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ইউনিফর্ম পরা দায়িত্বরত দুজনকে জ্বলন্ত সিগারেট হাতে দেখে যারপরনাই অবাক হই।
‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইন (সংশোধনী) ২০১৩’-এর ৪ এর উপ-ধারা (২) -এ বলা হয়েছে, পাবলিক প্লেসে ধূমপান করলে তিনি অনধিক তিনশত টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত হবেন এবং দ্বিতীয়বার একই ধরনের অপরাধ করলে উক্ত দন্ডের দ্বিগুণ হারে দন্ডিত হবেন।
সামাজিক সংগঠক ও গণমাধ্যমকর্মী সাজেদুর আবেদীন শান্ত বলেন, ‘প্রকাশ্য ধুমপানের বিরুদ্ধে আইন থাকলেও তা কেনো জানি আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা সেভাবে আমলে নেয় না। এর ফলে এই আইন অকার্যকর হয়ে পড়েছে। আইনের লোকের সদইচ্ছা ও আমাদের সচেতনতাই পারে এই প্রকাশ্য ধুমপান কমাতে’।
ধূমপান বন্ধে কাজ করছে সরকার, রয়েছে আইনও। কিন্তু সেসব তোয়াক্কা না করেই এক শ্রেণির মানুষ জনসম্মুখে ধূমপান করেই চলেছে। কবে বন্ধ হবে ধূমপান? কবেই বা স্বস্তিতে চলাচল করতে পারবে অধূমপায়ী মানুষ?
লেখকঃ মুশফিকুর রহমান, শিক্ষার্থী, নিশিন্ধারা ফকির উদ্দীন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বগুড়া
আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি জাগো বুলেটিনকে জানাতে ই-মেইল করুন- news.jagobulletin@gmail.com