দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে মার্কিন কূটনীতির প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হেনরি কিসিঞ্জার মারা গেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক এই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বয়স হয়েছিল ১শ’ বছর।
স্থানীয় সময় বুধবার রাতে কিসিঞ্জার অ্যাসোসিয়েটসের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে তার মৃত্যুর খবর জানানো হয়। বিবৃতিতে জানানো হয়, কানেটিকাট অঙ্গরাজ্যে নিজ বাড়িতে তিনি মারা যান।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, কিসিঞ্জারের পরিবার নিজস্ব উদ্যোগ তার অন্ত্যেষ্ট্রিক্রিয়ার আয়োজন করবে। নিউইয়র্কে পরে তার স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে।
বিবৃতিতে তার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। শতায়ু হওয়া সত্ত্বেও কিসিঞ্জার খুবই সক্রিয় ছিলেন। চলতি বছরের জুলাই মাসে তিনি চীনে যান এবং প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে বৈঠক করেন।
কিসিঞ্জার ১৯২৩ সালের ২৭ মে জার্মানির এক ইহুদি পরিবারে জন্ম নেন। পরে তার পরিবার পালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে চলে আসে। ঐ শহরেই বেড়ে ওঠেন কিসিঞ্জার।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন ও জেরাল্ড ফোর্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন হেনরি কিসিঞ্জার। এছাড়া তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
দায়িত্ব পালন কালে নানা বিতর্কিত ভূমিকার জন্য তিনি বিশ্বব্যাপী তীব্রভাবে সমালোচিত হয়ে আসছেন।
কম্বোডিয়া ও লাওসে ভিয়েতনাম যুদ্ধের সম্প্রসারণ, চিলি ও আর্জেন্টিনায় সামরিক অভ্যুত্থানে সমর্থন, ১৯৭৫ সালে পূর্ব তিমুরে ইন্দোনেশিয়ার রক্তক্ষয়ী অভিযানের পক্ষে অবস্থান নেওয়া এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর ব্যাপক নৃশংসতার বিষয়ে চোখ বন্ধ রাখার মতো নানা অভিযোগ রয়েছে কিসিঞ্জারের বিরুদ্ধে। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ হিসেবে আখ্যায়িত করে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হন
এসব অভিযোগ সত্ত্বেও ভিয়েতনাম যুদ্ধ বন্ধে আলোচনার জন্যে তিনি লে ডাক থো’র সাথে যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছিলেন। এ পুরষ্কার দেয়ায় সে সময়ে নোবেল কমিটিকে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল।
আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি জাগো বুলেটিনকে জানাতে ই-মেইল করুন- jagobulletinbd@gmail.com