নীলফামারীর ডিমলায় নাউতারা-ডিমলা পাকা সড়কে নির্মাণাধীন আরসিসি গার্ডার সেতুর পাশে বিকল্প সড়ক ভেঙে তলিয়ে গেছে। গত পাঁচদিন ধরে সড়কে সব ধরনের ভারি যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে। এতে ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন ২০ গ্রামের হাজারো মানুষ ।বিকল্প রাস্তা না থাকায় বাসিন্দারা ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে গিয়ে ঘটছে দুর্ঘটনা।
এদিকে খালের পানিতে স্রোত থাকায় নতুন করে বিকল্প সড়ক সংস্কার করতে পারছে না ঠিকাদার।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পুরোনো সেতুর ভাঙ্গা সামগ্রী দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে নিচু সড়ক নির্মাণ করায় পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে । এ কারনে সামান্য বৃষ্টিতেই বিকল্প সড়কটি তলিয়ে যায়।
জানা যায়, নাউতারা সড়কের সোনামনির ভাঙ্গা এলাকায় ৬০ মিটারের একটি আরসিসি গার্ডার সেতুর নির্মাণকাজ করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। এক বছর আগে সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। ৫ কোটি ৯৩ লাখ টাকা বরাদ্দে কাজটি পেয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রহমান-এস হোসেন। তবে সাব ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছেন শরিফুলইসলাম নামের এক ব্যক্তি।
পুরোনো বেইলি সেতু ভাঙার আগে সেতুর পাশে বিকল্প সড়ক ও ১০-১২ ফুট লম্বা দুটি কাঠের সাঁকো নির্মাণ করা হয়। নির্মাণাধীন সেতুর বিকল্প সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল করছিল। কয়েকদিন ধরে টানা ভারী বর্ষণে সেতুর নীচের খাল ও ফসলি মাঠ পানিতে ডুবে যায়। মাঠের পানির চাপে গত বৃহস্পতিবার রাতে নির্মানাধীন সেতুটির বিকল্প সড়ক পানির নিচে তলিয়ে যায়। নড়বড়ে কাঠের সেতুর দুই পাশের সংযোগ স্থানের মাটি ধসে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়। ফলে ওই সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায় ।এতে ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন এই সড়কে চলাচলকারী লোকজন ও শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, নির্মাণাধীন সেতু এলাকার দুইপাড়ে যানজট। বিকল্প সড়কের বেশিরভাগ অংশ পানির নীচে ডুবে আছে। কাঠের সেতুর দুই পাশের মাটি সরে গর্ত হয়েছে। চরম ভোগান্তিতে ঝুঁকিপূর্ন সেতু ও সড়ক দিয়েই চলাচল করছে স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষার্থীরা।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, এই সড়ক দিয়ে দুই ইউনিয়নের হাজারো মানুষ ও সব ধরনের যানবাহন চলাচল করে। যেহেতু নির্মাণাধীন সেতুর দুই পাশই নিচু। তাই পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রেখে উঁচু করে বিকল্প সড়ক নির্মাণ করা দরকার ছিল।পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ও সড়ক উঁচু থাকলে বর্ষা মৌসুমে এই ভোগান্তিতে পড়তে হতো না।
নাউতারা স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক জগদীশ চন্দ্র(অবসর) বলেন, প্রায় এক সপ্তাহ থেকে চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের উপর কোমর পানি উঠেছে। ঠিকাদারের অবহেলায় সরকারের উন্নয়ন কাজ অম্লান হচ্ছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন নারী ও শিশু এখানে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন। এটা খুবই দুঃখজনক। সংশ্লিষ্টদের কাছে অনুরোধ দ্রুত দুর্ভোগ নিরসন করা হোক।
দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী শিউলি আকতারসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, সড়ক ডুবে ভেঙে যাওয়ায় তিনদিন ধরে তারা স্কুলে যেতে পারেননি। এখন বিকল্প সড়ক না থাকায় তারা পানি ভেঙে ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যাতায়াত করছেন।
সেতুর ঠিকাদার শরিফুল ইসলাম বলেন, দরপত্র অনুযায়ী, সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। টানা ভারী বর্ষণে মাঠ ও খাল পানিতে ভরে গেছে। এ কারনে বিকল্প সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এখনো পানির স্রোত যাচ্ছে। স্রোত কমলে সড়ক সংস্কার করা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী শফিউল ইসলাম বলেন, বিকল্প সড়ক দ্রুত সংস্কারের জন্য ঠিকাদারকে বলা হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন , এলাকার কিছু লোক সেখানে নৌকায় চালানোর জন্য কাঠের সেতু ইচ্ছাকৃত ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন।
আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি জাগো বুলেটিনকে জানাতে ই-মেইল করুন- jagobulletinbd@gmail.com