ঢাকাশনিবার , ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  1. অপরাধ
  2. আন্তর্জাতিক
  3. আবহাওয়া
  4. কর্পোরেট বুলেটিন
  5. কৃষি সংবাদ
  6. খেলাধুলা
  7. গণমাধ্যম
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জেলা সংবাদ
  11. ঢাকা বিভাগ
  12. ধর্ম ও জীবন
  13. নাগরিক সংবাদ
  14. পদ্মাসেতু
  15. পাঁচমিশালি
আজকের সর্বশেষ সব খবর

শিক্ষা বোর্ডতো নয় যেন মামাবাড়ি, হযবরল অবস্থা!

নিজস্ব প্রতিবেদক,
জুলাই ১৫, ২০২৪ ৯:১৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

 দেশে সর্বশেষ শিক্ষা বোর্ড হিসেবে ২০১৭ সালে ২৮ আগস্ট গঠিত হয় ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড।ময়মনসিংহ বোর্ডে অধীনে ৪ জেলা ও ৩৫ উপজেলা  রয়েছে। শিক্ষা
বোর্ডের কর্মরত  কর্মকর্তারা বছরের পর বছর একই কর্মস্থলে চাকরির কারণে আভ্যন্তরীণ প্রশাসনিক কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়েছে। নিয়মানুসারে তিন বছর পরপর বদলি বা কর্মস্থল পরিবর্তনের কথা থাকলেও অজ্ঞাত কারণে এ নীতিমালা  ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে বাস্তবায়ন হচ্ছে না। কারণ হিসাবে জানা গেছে, ময়মনসিংহ নতুন শিক্ষা বোর্ড হওয়ায়
কর্মকর্তারা অনৈতিক সুবিধা ভোগ করার জন্যই মূলত একই কর্মস্থলে অবস্থান করছেন বছরের পর বছর। শিক্ষা বোর্ডে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে ছয় বছর  অধিক সময় ধরে কর্মরত আছেন আটজন কর্মকর্তা। ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের  পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মো: সামছুল ইসলাম ,উপ পরিচালক ( হিসাব ও নিরীক্ষা) প্রফেসর সারোয়ার জাহান সিদ্দিকী, বিদ্যালয় পরিদর্শক ড. মো: দিদারুল ইসলাম,উপ -কলেজ পরিদর্শক জামাল উদ্দিন  আহমেদ, উপ সচিব (প্রশাসন ও সংস্থাপন) মোহাম্মদ  মনিরুজ্জামান,
 উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ( উচ্চ মাধ্যমিক)
এস.এম.মোবাশ্বির হোসাইন, উপ সচিব ( আইন)মহা: মশিউল আলম,ক্রীড়া অফিসার মোহাম্মদ আব্দুল হকসহ সবাই ২০১৮ সালে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে যোগদান করেন।
উপ- পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ( চুক্তিভিত্তিক) সৈয়দ রফিকুল ইসলাম,সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোহসীনা বেগম ২০১৯ সাল থেকে কর্মস্থলে আছেন।
সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আবু সায়েম মো: হাসান ও সহকারী পোগ্রামার মো: মনোয়ারুল ইসলাম ২০২১ সাল হতে কর্মরত আছে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে।
অনন্য  কর্মকর্তাদের  মাঝে মাঝে বদলি হলেও  বদলি হচ্ছেন না এই ১২ জন  কর্মকতাদের। একটি সূত্র বলছে,  কর্মকর্তা বোর্ডের  থাকার জন্য আগের চেয়ারম্যানের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত। কিন্তু আগের চেয়ারম্যান অবসরে যাওয়ার পর এখন নতুন বোর্ড চেয়ারম্যানের আস্থাভাজন হওয়ার  জন্য বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করে আসছে ।
কর্মকর্তাদের ৫-৬ বছরের অধিক সময় ধরে দায়িত্ব পালন করলেও বদলি হচ্ছেন না।
 একই কর্মকর্তারা অধিক সময় একই কর্মস্থলে দায়িত্বে থাকায় । জানা গেছে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান  প্রধানদের সাথে মধুর ও বন্ধুত্ব সম্পর্ক। এসব কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে  এলেও সখ্যতার কারণে তাদের কিছুই হয় না।
এ বিষয়ে কেন তারা একই কর্মস্থলে বছরের পর বছর অবস্থান করছেন জানতে চাইলে নাম না প্রকাশের শর্তে  এক প্রতিষ্ঠান প্রধান  জানান, মূলত কমিটি  বাণিজ্য, নতুন প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন  করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্যই তারা একই কর্মস্থলে অবস্থান করেন দীর্ঘদিন।
এমন দুর্নীতির সঙ্গে সরাসরি মধ্যস্বত্বভোগী হিসেবে পরিচিত  জামালপুর জেলার এফ এম কলেজ অধ্যক্ষ ফেরদৌস আলী ও ময়মনসিংহে বৌওলা ডিগ্রি কলেজ প্রভাষক আজাদ  নামে শিক্ষককে
বোর্ডে প্রায় সময় আসতে দেখা যাই। এই তথ্য সত্যতা জানার জন্য বোর্ডের সিসিটিভি ফুটেজ দেখলে সত্যতা মিলবে।
এ বিষয়ে কেন তারা একই কর্মস্থলে বছরের পর বছর অবস্থান করছেন জানতে চাইলে নাম না প্রকাশের শর্তে  এক প্রতিষ্ঠান প্রধান  জানান, মূলত কমিটি  বাণিজ্য, নতুন প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন  করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্যই তারা একই কর্মস্থলে অবস্থান করেন দীর্ঘদিন।
এমন দুর্নীতির সঙ্গে সরাসরি মধ্যস্বত্বভোগী হিসেবে পরিচিত  জামালপুর জেলার এফ এম কলেজ অধ্যক্ষ ফেরদৌস আলী ও ময়মনসিংহে বৌওলা ডিগ্রি কলেজ প্রভাষক আজাদ  নামে শিক্ষককে
বোর্ডে প্রায় সময় আসতে দেখা যাই। এই তথ্য সত্যতা জানার জন্য বোর্ডের সিসিটিভি ফুটেজ দেখলে সত্যতা মিলবে।
এ বিষয় নিয়ে প্রতিবেদকে বলেন, লিগ্যাল এ্যাসিসটেন্স ফর ভালনারেবল সোসাইটি- লিভস’র এর সভাপতি ও মানবাধিকার কর্মী অঞ্জন সরকার, একটি কথা আছে নগরে আগুন লাগলে দেবালয়ও রক্ষা পায় না। চারদিকে এত লুটপাট আর এত দুর্নীতি, এর মধ্যে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হিসেবে শিক্ষা বোর্ডের কর্মচারী- কর্মকর্তারা টিকে থাকবেন, এমনটি আসলে হয় নি। শিক্ষা যদি জাতির মেরুদন্ড হয়, তাহলে সে মেরুদণ্ডটির কি অবস্থা আমরা তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। প্রথমকথা হচ্ছে শিক্ষকদের কাছ থেকে মানুষেরা নৈতিকতা আশা করে। আর আমরা যদি গত ২৭ তারিখে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের দিকে তাকাই, এই বোর্ডকে কেন্দ্র করে যে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে গত ৯ জুলাই তারিখের ‘খোলা কাগজ’ নামক পত্রিকায়, তা মানুষকে হতভম্ভ করে দেয়। এত অনিয়ম, এত দুর্নীতি শিক্ষক, শিক্ষা বোর্ডের কর্তাদের কাছে মানুষ প্রত্যাশা করে না।
 সারাদেশেই ভেঙ্গে পড়েছে শিক্ষা ব্যবস্থা, আমরা আমাদের অর্গানাইজেশনের পক্ষ থেকে বহুবার বহু অনিয়মের চিঠি দিয়েছে শিক্ষা কর্মকর্তাদের নিকট। কিন্তু প্রতিকারের বিষয় নিয়ে আমরা হতাশ।
প্রশ্ন আসে সমাধান কি? সমাধান সরকারকেই করতে হবে। দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে শাস্তিস্বরূপ শুধুমাত্র বদলির ব্যবস্থা না করে, অসদাচরণের দায়ে চাকুরি বিধিমালা অনুযায়ী তাদেরকে টারমিনেট করতে হবে, পাশাপাশি ফৌজদারি অপরাধের বিচারের জন্য আদালতের স্মরনাপন্ন হতে হবে।
এবার শিক্ষকদের দুর্নীতি নিয়ে দুটি কথা বলি-
বেসরকারি শিক্ষকরা কি মানুষ? তাদের কি পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে মোটেও? যদি থেকে থাকে তাহলে ঢাকা পোস্ট নামক পত্রিকায় প্রকাশ গত ১৩ই জুন যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার উত্তর শ্রীরামপুর গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষক নজরুল ইসলামের স্ত্রী তোহরা খাতুনের মৃত্যু নিয়ে । শিক্ষক নজরুল ইসলাম এমপিওভুক্ত খানপুর দাখিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক ছিলেন । তিনি দীর্ঘ ৩৫ বছর মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং একটি এমপিও দাখিল মাদরাসায় শিক্ষকতা করেছেন, ২০২০ সালে অবসরে যান এই শিক্ষক । অবসরপ্রাপ্ত এই শিক্ষক অবসরে যাওয়ার পরে আজ পর্যন্ত পেনশনের টাকা পাননি । পেনশনের টাকা না পাওয়ায় চিকিৎসা বন্ধ হয়ে বিনা চিকিৎসায় শিক্ষকের স্ত্রী মারা গেলেন, তার এক কন্যাও অসুস্থ । দীর্ঘ চার বছর ধরে কাগজপত্র নিয়ে দপ্তরে দপ্তরে ঘুরেও পেনশনের একটি টাকাও তুলতে পারেননি ।
এই অবস্থা জিইয়ে রেখে নৈতিকতা আশা করবেন শিক্ষকদের কাছ থেকে। এযেন পাথরের সোনার বাটির মত।
আমরা মানবাধিকার রক্ষা সংস্থা হিসেবে বলতে চাই- রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কাজ করবে, মানুষের আইনি অধিকার নিশ্চিতে কাজ করে যাবে, তবেই সুশাসন আসবে, দুর্নীতি কমবে।
এসব বিষয় নিয়ে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান  প্রফেসর আবু তাহের প্রতিবেদকে বলেন,আসলে পদায়ন ও বদলী এটা মন্ত্রণালয়ের বিষয়। কিন্তু বোর্ডের কায্যক্রম সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে করার জন্য এ বিষয় নিয়ে আমি মন্ত্রণালয়ে কথা বলবো।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি জাগো বুলেটিনকে জানাতে ই-মেইল করুন- jagobulletinbd@gmail.com